ঢাকা: একদিকে করোনার মতো প্রকোপ অন্যদিকে এই মহামারীর কোপেই বিধ্বস্ত দেশের অর্থনীতি। কোভিড-১৯-এ বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত আক্রান্ত ৭০। মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। প্রায় সাড়ে ষোলো কোটি জনসংখ্যা বিশিষ্ট এই দেশের অর্থনীতির ওপর বিশ্বের বাকি দেশগুলোর মতোই মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে করোনা ভাইরাস। উৎপাদনে ঘাটতির কারণে সবথেকে খারাপ অবস্থা বাংলাদেশের বস্ত্রশিল্পের। আশঙ্কা, চাকরি হারা হতে পারে অন্তত ১ লক্ষ শ্রমিক।
এই পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতি সামাল দিতে বড় প্যাকেজের ঘোষণা করলেন মুজিব কন্যা শেখ হাসিনা। এদিন গণভবন থেকে জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, দেশের কঠিন সময়ে সরকারের তরফে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করা হল। তিনি বলেন, “রফতানি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের বেতনের জন্য আমি আগেই ৫০০০ কোটি টাকার আপতকালীন প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলাম। আজ নতুন করে আরও ৬৭ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করছি।” তিনি আশাবাদী, মহামারী কেটে যাওয়ার পর দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে এবং নতুন প্যাকেজ সেই কাজকে তরাণ্বিত করবে।
মূলত ৪টি ভাগে এই প্যাকেজকে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে যেমন চাকুরিজীবীদের কথা ভাবা হয়েছে, ঠিক তেমনই সামাজিক সুরক্ষার বিষয়টিও প্রাধান্য পেয়েছে। এই আর্থিক প্যাকেজের প্রায় অর্ধেকটা (৩০ হাজার কোটি) শিল্প সার্ভিস সেক্টরের জন্য বরাদ্দ। অল্প সুদে ঋণের বন্দোবস্তও করেছে বাংলাদেশে সরকার। যেখানে সুদের অর্ধেকটাই শোধ করে দেবে সরকার। রবিবার শেখ হাসিনা জানিয়ে দেন, “নতুন পরিষেবায় ঋণে সুদের হার হবে ৯ শতাংশ। এই সুদের সাড়ে চার শতাংশ শোধ করতে হবে শিল্প এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে। বাকি সাড়ে চার শতাংশ ভর্তুকি দেবে সরকার।”
ক্ষুদ্র, মাঝারি ধরণের কুটির শিল্পের জন্য সরকার ২০ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ রেখেছে। এখানেও ঋণ শোধের ক্ষেত্রে একই রকম নিয়ামাবলী রাখা হয়েছে। ঋণগ্রহণকারীকে মেটাতে হবে অর্ধেকটা, বাকিটা শোধ করে দেবে সরকার। এছাড়াও এক্সপোর্ট ডেপলপমেন্ট ফান্ড বাবদ সরকার বরাদ্দ করেছে ১২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা।
প্রসঙ্গত, গত শনিবারই বাংলাদেশ সরকার পরিবহণ শাটডাউনের সময়সীমা বাড়িয়ে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত করে দিয়েছে। গোটা দেশে এখনও পর্যন্ত ৭০ জন আক্রান্ত। চিন্তা বাড়িয়েছে নতুন করে ৯ জনের টেস্ট রিপোর্ট। এদের প্রত্যেকেই কোভিড-১৯ পজিটিভ বলে সূত্রের খবর।