রোম: ইউরোপের দেশগুলির মধ্যে নোভেল করোনা ভাইরাসের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে ইতালিতে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ২১ হাজারেরও বেশি। মৃত্যু হয়েছে ১,৪০০-রও বেশি আক্রান্তের। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল তাঁদের ছবি।


ইতালির স্বাস্থ্যব্যবস্থা বিশ্বের অন্যতম সেরা। কিন্তু করোনা ভাইরাস সামাল দেওয়ার পক্ষে সেটাও যথেষ্ট মনে হচ্ছে না। চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের উপর মারাত্মক চাপ পড়ছে। এলিনা পাগলিয়ারিনি নামে এক নার্সের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তিনি এতটাই ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন, কি-বোর্ডের উপরেই মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছেন।

এ বিষয়ে এলিনা বলেছেন, ‘প্রথমে সব জায়গায় আমার ছবি দেখে বিরক্ত লাগছিল। আমার দুর্বলতা সবার কাছে প্রকাশিত হয়ে যাওয়ায় লজ্জাও লাগছিল। কিন্তু যখন সবাই সুন্দর সুন্দর মেসেজ পাঠাতে শুরু করে, তখন আমার ভাল লাগে। আমি শারীরিকভাবে ক্লান্ত হইনি। প্রয়োজন হলে আমি টানা ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে পারি। কিন্তু আমি এখন উদ্বিগ্ন। কারণ, কোন শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে সেটা আমি জানি না।’

এলিনার মতো একই অবস্থা ইতালির বেশিরভাগ চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীর। বারগামো শহরের একটি হাসপাতালের চিকিৎসক ড্যানিয়েল ম্যাকচিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমি দু’সপ্তাহ ধরে ছেলে ও পরিবারের অন্যান্য লোকজনের সঙ্গে দেখা করিনি। কারণ, আমার আশঙ্কা, ওদেরও সংক্রমণ হতে পারে। আমার কাছে ছেলের কিছু ছবি আছে। সেটা দেখতে গিয়ে চোখে জল এসে যায়। মাঝে মাঝে ভিডিও কলে ওদের সঙ্গে কথা বলি।’

টাসকানি প্রদেশের গ্রসেটো শহরের এক নার্স অ্যালেসিয়া বনারি ইনস্টগ্রামে বিধ্বস্ত অবস্থার একটি ছবি পোস্ট করেছেন। সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একটানা সার্জিক্যাল মাস্ক পরে থাকার ফলে তাঁর সারা মুখে চাকা চাকা দাগ হয়ে গিয়েছে।

তুরিনের একটি হাসপাতালের চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের মানসিকভাবে চাঙা রাখার জন্য মনোবিদ নিয়োগ করা হয়েছে। ইতালির সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, অন্তত ৫০ জন চিকিৎসক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসায় বেশ কয়েকজন চিকিৎসাকর্মীকে আলাদা রাখা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের শারীরিক পরীক্ষায় সংক্রমণ ধরাও পড়েছে। ফলে উদ্বেগ বাড়ছে।