ঢাকা:বঙ্গোপসাগরের ভাসান চর দ্বীপে রোহিঙ্গা পরিবারগুলিকে পাঠানোর কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, কুটুপালং শরণার্থী শিবিরে দেখা গিয়েছে যে, শরণার্থী ও তাঁদের জিনিসপত্র টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তখন তাঁদের পরিজনরা বাধা দেওযার প্রবল চেষ্টা করছেন। গাড়ির পিছনে কাঁদতে কাঁদতে ছুটছেন। সংবাদংসস্থা এপি বলপূর্বক শরনার্থীদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা তুলে ধরেছে। উদাহরণ হিসেবে ৬০ বছরের খুলসুমা খাতুন, তাঁর মেয়ে ফতিমা বেগম ও জামাতাকে ট্রানসিজ ক্যাম্পে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী তাঁদের মারধরও করেছে বলে অভিযোগ।
খুলসুমা সংবাদসংস্থাকে বলেছে, ওরা আমাদের জোর করে ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে এসেছে এবং এরপর আবার জোর করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমার মেয়ের স্বামীর ওপর খুব অত্যাচার হয়েছে বলে শুনেছি। প্রাণের ভয়ে সে আমাদের কাছে সে কথা বলেনি। আমার মেয়েকে (কুটুপালং)-এ ফিরে আসতে দিলে ভালো হয়। আমার নাতি-নাতনিরা কান্নাকাটি করছে।
১৮ বছরের জন্নত আরা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ তাঁর বাবাকে আটক করা হয়েছে এবং বন্দুক দেখিয়ে তাঁকে স্থানান্তরে রাজি হতে বাধ্য করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, 'প্রথমে পুলিশ বাবাকে গ্রেফতার করে। বাবাকে মারধরও করা হয়। একদিন তাঁকে বন্দুক দেখিয়ে হুমকি দেওয়া হয় এবং লাঠি দিয়ে মারা হয়। তাঁকে বেছে নিতে বলা হয়, চরে চলে যাবেন, নাহলে এখানে মৃত্যুর মুখে পড়তে হবে। জীবন বাঁচাতে বাবা ভাসান চরে যেতে রাজি হন। মা রাজি ছিল না। কিন্তু বাবা যাচ্ছে, তাই মাও চলে যাচ্ছে'।
বর্ষার সময় জলমগ্ন হয়ে পড়ে ভাসান চর। পাশাপাশি মায়ানমার থেকে হিংসার কারণে পালিয়ে আসা প্রায় ৭ লক্ষ রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের জন্য পর্যাপ্ত নয় ওই দ্বীপ। বলা হচ্ছে, প্রায় লাখখানেক মানুষই সেখানে বসবাস করতে পারে।


২০১৭-র অগাস্ট থেকে প্রায় সাত লক্ষ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছেন। বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছিল। সেই সময় থেকেই সেই দেশ থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন।
বাংলাদেশ ওই সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু এখন বাংলাদেশের সরকারের যুক্তি, কক্সবাজারের সামনে শরণার্থী শিবিরগুলিতে ভিড়ি এড়াতে চাইছে তারা।

রাষ্ট্রপুঞ্জ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ভাসান চরে শরণার্থীদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ স্থগিত রাখার আর্জি জানিয়েছে।
দ্বীরে বিদেশী সংবাদমাধ্যমের যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।