পেশোয়ার: দিলীপ কুমার, রাজ কাপুরের পৈতৃক বাড়িকে ন্যাশনাল হেরিটেজ ঘোষণা করল পাকিস্তান। পেশোয়ার শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত বাড়ি দুটি কিনে নিতে ২.৩৫ কোটি টাকা বরাতও ঘোষণা করেছে তারা। এই দুই বাড়ির মালিকানা আপাতত যাদের দখলে, তারা ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার ইতিহাসকে গুঁড়িয়ে সেই জায়গায় শপিং কমপ্লেক্স গড়ে তুলতে চেয়েছিল। যদিও স্থানীয় প্রশাসনের চেষ্টায় শেষমেশ যোগ্য সম্মান পেয়ে মিউজিয়াম হচ্ছে প্রবাদপ্রতীম দুই অভিনেতার জন্মভিটে।

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুন (কেপিকে) সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মেহমুদ খান যে ঘোষণা করেন। কয়েক সপ্তাহ আগে খাইবার পাখতুনখা কমিউনিকেশন অ্যান্ড ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্টের (সি অ্যান্ড ডব্লিউ) পক্ষ থেকে প্রাক্তন দুই কিংবদন্তি ভারতীয় অভিনেতার পৈতৃক বাড়ির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।

পেশোয়ারের ডেপুটি কমিশনার মুহাম্মদ আলি আসগার জানান, সি অ্যান্ড ডব্লিউ সংস্থার পক্ষ থেকে দিলীপ কুমারের চার মার্লা (১০১ স্কোয়ার ফুট) পৈতৃক বাড়ির মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৮০.৫৬ লক্ষ টাকা। আর রাজ কাপুরের ছয় মার্লা (১৫১.৭৫ স্কোয়ার ফুট) বাড়ির মূল্য স্থির করা হয় ১.৫০ কোটি টাকা। ২৭২.২৫ স্কোয়ার ফুট বা ২৫.২৯২৯ স্কোয়ার মিটার এলাকা নির্ধারিত হয় ১ মার্লা হিসেবে।

কেপিকে-র পক্ষ থেকে দিলীপ কুমার ও রাজ কাপুরের পৈতৃক বাড়ি কিনে নেওয়ার পরে সেগুলিকে মিউজিয়াম হিসেবে গড়ে তোলা হবে বলেই জানা যাচ্ছে। কেপি আর্কিওলজিকাল ডিপার্টমেন্টকে যে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সরকারিভাবে আর্কিওলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে কেপিকে সরকারের কাছে ঐতিহাসিক বাড়ি দুটি কেনার জন্য ২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে বলে ইতিমধ্যে চিঠিও লিখেছে।

ভারতীয় সিনেমার দুই কিংবদন্তি দিলীপ কুমার ও রাজ কাপুরের জন্ম অধুনা পাকিস্তানের জমিতে। তাদের ছোটবেলাও কেটেছে সেখানেই। দেশভাগের পর এদেশে চলে এসেছিল দুই অভিনেতার পরিবার।

পেশোয়ারের কুইসা খাওয়ানি বাজার এলাকায় অবস্থিত রাজ কাপুরের পৈতৃক বাড়ি পরিচিত কাপুর হাভেলি নামে। ১৯১৮ থেকে ১৯২২ সালের মধ্যে রাজ কাপুরের পিতামহ তথা অপর কিংবদন্তি অভিনেতা দেওয়ান বশেশ্বর কাপুর যা নির্মাণ করেছিলেন। রাজ কাপুর ছাড়াও তাঁর কাকা ত্রিলোক কাপুরেরও জন্ম হয়েছিল কাপুর হাভেলিতেই।

কাপুর হাভেলি ছাড়াও পাকিস্তান ন্যাশনাল হেরিটেজ তকমা দিচ্ছে একই এলাকায় অবস্থিত দিলীপ কুমারের পৈতৃক বাড়িকেও। যে বাড়িও প্রায় ১০০ বছর আগে তৈরি। যে বাড়িকে অবশ্য ২০১৪ সালেই ন্যাশনাল হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করেছিল নওয়াজ শরিফ সরকার। মাঝে অবশ্য প্রক্রিয়াটিকে আটকে ছিল বিভিন্ন কারণে।