নয়াদিল্লি: মাত্র ৩৪ বছর বয়সেই ক্ষমতার শীর্ষে পৌঁছে গিয়েছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন। মাত্র এক বছরের মধ্যেই শত্রুপক্ষের সমস্ত চাল উল্টে দিয়ে বাবার উত্তরাধিকারী হিসেবে ঘোষিত হয়েছেন। প্রথমে সেনা ও নিরাপত্তা পরিষেবা দিয়ে সরকারি দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন এবং তেল সম্বৃদ্ধ দেশের অগ্রগতির দিকনির্দেশিকা তৈরি করেন। সম্প্রতি একটি গ্রন্থে সৌদি যুবরাজের জাঁকজমক ও আড়ম্বরপ্রিয়তার একটি ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। পাঁচ বছর আগে ২০১৫-র জুলাইতে সৌদি আরবের তত্কালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী তথা যুবরাজ মলদ্বীপে একটি জমকালো পার্টির আয়োজন করেছিলেন। তখন তাঁর বয়স ছিল ২৯। এই পার্টির জন্য মলদ্বীপের ভেলা রিসর্ট এক মাসের জন্য প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডলার অর্থে বুক করা হয়েছিল। গোপনীয়তা নিয়ে সৌদি যুবরাজ এতটাই খুঁতখুতে ছিলেন যে, রিসর্টে ক্যামেরা যুক্ত মোবাইল নিয়ে যাওয়াই নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। আমেরিকার বিখ্যাত র‌্যাপার পিটবুল ও দক্ষিণ কোরিয়ার পপ তারকা সাইও এসেছিলেন। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, পার্টিতে নাকি জেনিফার লোপেজ ও শাকিরার মতো তারকাদেরও আসার কথা ছিল। এই পার্টির জন্য অকাতরে অর্থ ব্যয় করা হয়েছিল।


এই পার্টির জন্য সবার আগে ১৫০ জন মডেল রিসর্টে পৌঁছছিলেন। রাশিয়া, ব্রাজিল সহ অন্যান্য দেশ থেকে এই মডেলরা এসেছিলেন। তাঁদের প্রথমে ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করে দেখা হয়, কোনও রকম যৌন রোগ রয়েছে কিনা। যুবরাজের বন্ধুদের সঙ্গে পুরো একমাস কাটানোর কথা ছিল ওই মডেলদের।
যুবরাজ এসেছিলেন তাঁর সুবিশাল ৪৩৯ ফুটের জাহাজ নিয়ে। ঠিক এক বছর আগে এই ইয়ট বিল গেটস ভাড়ায় নিয়েছিলেন। এই সময়েই ভার্সাইয়ের কাছে ৩০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে একটি বাড়িও কিনেছিলেন। যদিও শীঘ্রই এই উত্সব উদযাপনের পরিকল্পনায় বাধা আসে। মলদ্বীপের একটি প্রকাশনে এই পার্টির খবর ফাঁস হয়ে যায়। সেজন্য যে পার্টির এক মাস চলার কথা, তা এক সপ্তাহেই শেষ হয়ে যায়।
যুবরাজ সলমনের অর্থপ্রীতির একটি কারণ হল যে, ২০০০-র শুরুর দশকে তাঁর বাবাকে খুব কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল। সৌদি রাজতন্ত্রের মর্যাদার পক্ষে তা একেবারেই অনুকূল ছিল না। আর এই কারণেই নিজেকে ব্যবসায়ী হিসেবে গড়ে তোলেন তিনি। প্রচুর অর্থোপার্জন যেমন করেছেন, তেমনি দুহাতে খরচও করেছেন। এ ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ব্যক্তিগত খরচ খরচার কথা বলতে গেলে আমি ধনী, গরিব নই।
যুবরাজ সলমনের মধ্যে সবসময়ই রয়েছে এগিয়ে যাওয়ার উদ্যম। এজন্য বন্ধুবান্ধব মহলে বলেন, আমাদের মধ্যে পরবর্তী প্রজন্মের ভবিষ্যত স্থির করার ক্ষমতা রয়েছে।