ইয়াংগন: হঠাৎই ফের সেনা অভ্যুথান। যার জেরে রাজধানী নাই পেই তাই ও মায়ানমারের সবথেকে বড় শহর ইয়াংগন ছয়লাপ সেনাতে। যাবতীয় দেশি-বিদেশি চ্যানেল বন্ধ। যে তালিকায় রয়েছে মায়ানমার সরকার পোষিত চ্যানেলও। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ব্যাঙ্ক। ছেদ পড়েছে মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবাতেও। সবমিলিয়ে ফের একবার প্রবল অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সামনে মায়ানমারবাসী। আর যার জেরে দেশের সেনার প্রতি জনগণের ক্ষোভ বেড়েছে প্রবলভাবে।

মায়ানমারের রাস্তায় রাস্তায় নেমে এসেছেন সেখানকার জনগণ। ব্যাঙ্কগুলির এটিএমের সামনে দেখা যাচ্ছে লম্বা লাইন। অনিশ্চিত এক ভবিষ্যতের সামনে দাঁড়িয়ে দেশের সেনার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন নাগরিকরা। দেশের সেনাপ্রধান মিন আং হালিংয়ের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি দেশের প্রধান নেত্রী আন সান সুচি-র মুক্তির দাবিও তুলেছেন তারা।

স্বস্তির খবর এটাই যে, মায়ানমার এখনও বড় কোনও হিংসার খবর নেই। আজ সকালে হঠাৎই ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি-র নেত্রী আং সান সু চি-সহ বেশ কয়েকজন শাসক-নেতাকে আটক করে সেনাবাহিনী। ঘোষণা করে অভ্যুথানের। সুচি সহ নেতাদের কোথায় সরিয়ে রেখেছে সেনা, তা নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা।

এক বছরের জন্য দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছে সেনাবাহিনী। তারা জানিয়েছে পরের ভোট হবে বছর খানেক পরে। গত বছর নভেম্বর মাসে সংসদ নির্বাচন হয় মায়ানমারে। শাসক দল এনএলডি-র বিরুদ্ধে ভোটে কারচুপির অভিযোগ ওঠে। বিপুল ভোটে জেতে এনএলডি। নব নির্বাচিত সরকারের আজই প্রথম সংসদ অধিবেশন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগে ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি-র নেত্রী আং সান সু চি-সহ প্রথম সারির নেতাদের আটক করে মায়ানমারের সেনাবাহিনী।

মায়ানমারে সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থান নয়। এক দশক আগে সেনা শাসন ছিল সেদেশে। প্রায় ৫০ বছর মিলিটারি শাসন ছিল দেশে। এর আগে ১৯৮৯ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে প্রায় ১৫ বছর আটক করে রাখা হয়েছিল সু চিকে। ২০১০ সালে তিনি ছাড়া পাওয়ার পর ২০১৫ সালে মায়ানমারে আয়োজিত ২৫ বছরের মধ্যে প্রথম নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে তাঁর দল।

২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের ভূমিকা বিশ্বে প্রশ্নের মুখে নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপক সু চিকে আপাতত আটক করার জেরে মায়ানমারের সেনার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছ প্রায় সকলেই।

ভারত, ব্রিটেন থেকে শুরু করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মায়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে গভীর আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সকলেই।