ওয়াশিংটন: বুধবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হল। প্রথম মহিলা হিসেবে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন কমলা হ্যারিস। তবে তিনি শুধু প্রথম মহিলা মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টই হলেন না, একইসঙ্গে প্রথম অশ্বেতাঙ্গ এবং প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত হিসেবেও ইতিহাস তৈরি করলেন। বুধবার শপথগ্রহণ করার পরেই তাঁর ট্যুইট, ‘আমি কাজ করতে তৈরি।’

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথগ্রহণ করার পরেই কমলার ট্যুইটার হ্যান্ডলের বায়োও বদলে গিয়েছে। শুধু ভাইস প্রেসিডেন্টই না, এরই সঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘ফার্স্ট সেকেন্ড জেন্টলম্যানের স্ত্রী। মমালা। আন্টি। মানুষের জন্য লড়াকু।’

কমলার স্বামী ডগ এমহফ আইনজীবী। ট্যুইটার বায়োর মাধ্যমে তাঁকেও সম্মান জানালেন নতুন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট।

গত চার বছর ধরে ক্যালিফোর্নিয়ার সেনেটর ছিলেন কমলা। তিনি স্যান ফ্রান্সিস্কোর প্রথম মহিলা ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি হিসেবেও কাজ করেছেন। তিনিই প্রথম অশ্বেতাঙ্গ মহিলা হিসেবে ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল নির্বাচিত হন।

বুধবার কঠিন পরিস্থিতিতে ছেচল্লিশতম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন জো বাইডেন। আটাত্তর বছরের ডেমোক্র্যাট নেতা এখন থেকে সাদা বাড়ির নতুন ক্যাপ্টেন।

বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠান ঘিরে ওয়াশিংটনে নিরাপত্তা ছিল বজ্র আঁটুনি। এফবিআই আর ন্যাশনাল গার্ডের সেনায় মুড়ে ফেলা হয় গোটা ক্যাপিটল হিল। দু সপ্তাহ আগে ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে হামলার কথা মাথায় রেখে কোনও ঝুঁকি নেয়নি মার্কিন প্রশাসন। কোভিডের কারণে অতিথি সংখ্যা ছিল নিয়ন্ত্রিত। আমেরিকার জাতীয় পতাকায় মুড়ে ফেলা হয় গোটা এলাকা। তার মধ্যে অনেক ফ্ল্যাগ আবার কোভিডে প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের স্মরণে।

বাইডেনের অভিষেক পর্বে বিদায়বেলার সৌজন্যটুকু বজায় রাখেননি ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকার ইতিহাসে অ্যান্ড্রু জনসনের পর ডোনাল্ড ট্রাম্পই একমাত্র প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট যিনি নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেন না। তার অনেক আগেই ফ্লোরিডা রওনা দেন তিনি। যাওয়ার আগে বলে যান, আবার ফিরে আসবেন তিনি।

গত চার বছর ধরে চলে আসা চরমপন্থী রাজনীতি, বর্ণবিদ্বেষ, সঙ্গে কোভিড মহামারীর কামড়, টালমাটাল অর্থনীতি --- বাইডেনের সামনে চ্যালেঞ্জ অনেক।
যা দেখে বহু আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনন্ত প্রত্যাশারম মাঝে এ যেন কাঁটার মুকুট পরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যত বেশি প্রত্যাশা, সামনে ততই কঠিন পথ। সেই কঠিন পথ চলার আগে নিজের বক্তৃতায় স্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বাইডেন বলেছেন, তাঁর এই সফরে জিল বাইডেনের সঙ্গ পাওয়া সত্যি ভাগ্যের।