উহান: ঠিক যেন বন্দিদশা থেকে মুক্তি। চিনের উহানে ৭৬ দিন পর লকডাউন উঠতেই যেভাবে লোকজন দলে দলে রাস্তায় বেরিয়ে পড়লেন, সেটা দেখে এই কথাটাই মনে হচ্ছে। আজ উহান থেকে ট্রেনে উঠেছেন ৫৫ হাজার মানুষ। উড়ানও ধরেছেন বহু মানুষ। আজ প্রথম উড়ানটি ধরেন মূলত চিকিৎসকরা। বিমানবন্দরে কিছুটা বিশৃঙ্খলার ছবিও দেখা যায়। পাশাপাশি গাড়ি নিয়েও রাস্তায় নেমেছেন অসংখ্য মানুষ। টোল প্লাজাগুলিতে গাড়ির লম্বা লাইন দেখা যায়।


আজ উহান থেকে প্রথম ট্রেন ধরেন ২২ বছরের শিক্ষিকা জেং জিয়াও। তিনি জানিয়েছেন, ‘গুয়াংঝাউতে আমার বাড়ি। প্রায় তিন মাস বাড়ি যেতে পারিনি। এতদিন পরে ট্রেন চালু হওয়ায় আমি খুব খুশি। সবার শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে তবেই ট্রেনে উঠতে দেোয়া হচ্ছে। সেই কারণে আমি কিছুটা উদ্বিগ্ন ছিলাম। তবে শেষপর্যন্ত আমার শরীরের তাপমাত্রা বেশি বলে যন্ত্রে ধরা পড়েনি। ফলে আমি ট্রেনে উঠতে পেরেছি।’

লকডাউন উঠে গেলেও, উহান অবশ্য এখনও স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি। এই শহরে এতদিন ধরে যাঁরা আটকে ছিলেন, তাঁরা এখন অন্যান্য জায়গায় চলে যেতে পারছেন। তবে যাঁদের সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে, তাঁরা কোথাও যাচ্ছেন না। যাঁরা কাজকর্ম উপলক্ষে বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন, তাঁদেরও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাড়িতে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উহানের অনেক বাসিন্দাই এখনও আতঙ্কিত। ফু বিয়ানলিন নামে এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, ‘আমি জুন মাসের আগে বাড়ির বাইরে যাচ্ছি না। গরম পড়লে ভাইরাস মরে যাবে। সেই সময়ই আমি বাইরে যাব।’

করোনা ভাইরাসের জেরে উহানের অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। ফলে অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করাই এখন সরকারের লক্ষ্য। উহানের এক ব্যবসায়ী হুয়া মেং জানিয়েছেন, ‘সরকার যখন লোকজনকে উহান থেকে অন্যত্র যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে, তখন নিশ্চয়ই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। সবচেয়ে কঠিন সময় কেটে গিয়েছে।’