রোম: অসংখ্য ছোট ছোট পাখি, বেশিরভাগই স্টারলিং। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে রোমের রাস্তায়, সকলে প্রাণহীন। ১ জানুয়ারির সকালে এই দৃশ্যের সাক্ষী হয়েছেন ইতালির রাজধানীর বাসিন্দারা। ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর দ্য প্রোটেকশন অফ অ্যানিম্যালস (OIPA) অভিযোগ করেছে, বাজির প্রচণ্ড শব্দ আর চোখ ধাঁধানো আলো সহ্য করতে না পেরে মারা গিয়েছে পাখিগুলি।

রোমের রাস্তাঘাট গাছপালায় ঢাকা, সেগুলিতে অসংখ্য পাখির বাস। নতুন বছর উপলক্ষ্যে মানুষের আনন্দের ধকল সইতে না পেরে বেঘোরে মারা পড়েছে সেগুলি। ব্যক্তিগতভাবে বাজি পোড়ানো রোমে নিষিদ্ধ, করোনাভাইরাসের জেরে শহরে কারফিউও চলছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বর্ষবরণের রাতে সে সবে পাত্তা দেয়নি কেউ। কয়েকশো পাখি মারা পড়েছে, পশু অধিকার রক্ষা সংস্থাগুলি যাকে এক কথায় সংহার বলে আখ্যা দিয়েছে।


ঠিক কীভাবে পাখিগুলি মারা পড়ল এখনও স্পষ্ট নয়। ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর দ্য প্রোটেকশন অফ অ্যানিম্যালসের জনৈক মুখপাত্র লোরেদানা দিগলিও বলেছেন, হতে পারে, তারা স্রেফ ভয়ে মারা গিয়েছে। অথবা এত আলো দেখে সবাই এক সঙ্গে ওপরে উড়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল, তখন আকাশে একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছে। বা ধাক্কা খেয়েছে লোকের বাড়ির জানালা অথবা বিদ্যুতের লাইনে। আবার ভয়ের চোটে হৃদযন্ত্র স্তব্ধ হয়ে যাওয়াও সম্ভব।

প্রতি বছরই এভাবে বাজি পোড়ানোয় গৃহপালিত তো বটেই, বন্যজন্তুরাও হতাহত হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।

কিন্তু রোমের রাস্তায় রাস্তায় এভাবে এত সংখ্যক মৃত পাখির পড়ে থাকা এই প্রথম। OIPA-র ইতালীয় শাখা দেশে বাজি বিক্রি নিষিদ্ধ করার দাবি করেছে, বলেছে, এমন আইন করা হোক, যাতে ব্যক্তিগতভাবে কেউ বাজি পোড়াতে না পারেন, এতে জীবজন্তুর ক্ষতি হচ্ছে।

রয়্যাল সোসাইটি ফর দ্য প্রোটেকশন অফ বার্ডস বলেছে, পাখিদের ওপর বাজি পোড়ানোর প্রভাব তুমুল ঝড়বৃষ্টির সমান। যাতে এতে পাখিদের কোনও ক্ষতি না হয়, তা দেখতে জীবজন্তুদের বাসস্থানের কাছাকাছি রকেট ছোঁড়া বন্ধ করা উচিত, বিশেষ করে যে সব জায়গায় পাখিরা থাকে, ডিম পাড়ে ও সন্তানের রক্ষণাবেক্ষণ করে।