সিয়াটেল: করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভরকেন্দ্র এখন আমেরিকা। এরইমধ্যে করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৭০ বছরের এক বৃদ্ধ। সিয়াটেলের এই বাসিন্দা মিখায়েল ফ্লোরকে করোনাকে হারিয়ে সেরে উঠতে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশিদিন হাসপাতালে থাকতে হয়েছে। এ জন্য তাঁকে অনেকে মিলিয়ন ডলার বেবি বলেও ডাকছেন। কিন্তু সেরে ওঠার পর হাসপাতাল থেকে যে অঙ্কের বিল তিনি পেয়েছেন, তা দেখে আঁতকে উঠেছিলেন ফ্লোর। তাঁর কাছে এসেছে ১.১ মিলিয়ন ডলার অর্থাত্ ৮.১৪১১ কোটি টাকার বিল। বিলটি কার্যত একটা বড়সড় বইয়ের মতো। বিলটি ১৮১ পৃষ্ঠার।
হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময় কার্যত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন তিনি।
দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। একটা রাতে তো যায়-যায় অবস্থা হয়েছিল। রাতের শিফ্টের দায়িত্বে থাকা এক নার্স দয়াপরবশত তাঁর কানে ফোন ধরেছিলেন, যাতে তিনি তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের বিদায় জানাতে পারেন। কিন্তু ফ্লোর বেঁচে যান। আর এই কারণেই তাঁকে মিরাকল চাইল্ড নামও দেওয়া হয়।

কিন্তু ফ্লোরের বরাতে আরও অনেক কিছু ছিল। পশ্চিম সিয়াটেলে নিজের বাড়িতে ফিরে হাসপাতালের বিল দেখে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায়। ফ্লোর বলেছেন, বিলে চিকিত্সার খরচের পরিমাণ দেখে এক সেকেন্ডের মতো হৃদস্পন্দন থমকে গিয়েছিল।
ফ্লোরের করোনাভাইরাস সংক্রমণের চিকিত্সায় খরচের পরিমান ১.১ মিলিয়ন ডলার অর্থাত্ ভারতীয় মুদ্রায় ৮.১৪১১ কোটি টাকার মতো।
আসলে ১৮১ পাতার এই বিলে খরচের বিস্তারিত জানানো হয়। বিমা রয়েছে ,তাই এই অর্থের একটা বড় অংশই তাঁকে দিতে হবে না। তাছাড়া, তিনি কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছিলেন। অন্য কোনও রোগ নয়। এজন্য তাঁকে হয়ত কিছুই দিতে হবে না।
কিন্তু এরপরও ফ্লোর ও তাঁর পরিবার-পরিজনরা পুরো ঘটনায় হতবাক। আমেরিকার স্বাস্থ্য পরিষেবার এই অদ্ভূত আর্থিক হিসেব নিকেশের কোনো কূল কিনারা খুঁজে পাচ্ছেন না তাঁরা।
ইশাকুয়াহর সুইডিশ মেডিক্যাল কেয়ারে ফ্লোর ৬২ দিন ভর্তি ছিলেন। তিনি জানতেন, বিলের পরিমাণ বেশিই হবে। হাসপাতালে বেশিরভাগ সময়টাই তিনি সংজ্ঞাহীন ছিলেন। তবে একবার শুরুর দিকে চেতনা ফেরার পর তাঁর স্ত্রীকে ফ্লোর বলেছিলেন, এখান থেকে নিয়ে চল। এত ব্যয় সামলাতে পারব না।
আক এই বিল পাওয়ার পর নিজের প্রতিক্রিয়াতেই বিস্মিত হয়েছিলেন ফ্লোর। আর তা ছিল অপরাধবোধ।