তাইওয়ান: সারা বিশ্বজুড়ে অব্যাহত করোনাভাইরাসের দাপট। মারণ এই ভাইরাসের মোকাবিলায় হিমশিম খেতে হচ্ছে বিভিন্ন দেশকে। এরইমধ্যে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম তাইওয়ান। গত ২০০ দিনে সেখানে স্থানীয়ভাবে কারুর এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেনি। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে শুরু করে আমেরিকা, ভারতে প্রত্যেকদিনই প্রচুর মানুষের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে। কিন্তু তাইওয়ানে স্থানীয়ভাবে সংক্রমণের খবর শেষ এসেছিল গত ১২ এপ্রিল।

প্রায় ২.৩০ কোটি জনসংখ্যার তাইওয়ান কীভাবে এক্ষেত্রে সাফল্য পেয়েছে? প্যাথোলজিস্টরা বলছেন, আগেভাগে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়াটাই ফারাক গড়ে দিয়েছে। এরসঙ্গে রয়েছে কঠোর নিয়ন্ত্রিত ভ্রমণ, কনট্যাক্ট ট্রেসিং, প্রযুক্তি সহায়ক কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা এবং ব্যাপকভাবে মাস্ক ব্যবহারের মতো  ব্যবস্থা।

এছাড়াও সার্সের ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব থেকে ঠেকে শিখেছেন তাইওয়ানের বাসিন্দারা। এবার কোনও বিপর্যয় এড়াতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন সাধারণ মানুষ। গত ১২ এপ্রিল তাইওয়ানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৩৫।

সিডিসি-র মুখপাত্র চুয়াঙ জেন-সিয়াং এই সাফল্যের জন্য তাইওয়ানের সাধারণ মানুষের সেল্ফ কোয়ারেন্টিন, বিমানবন্দরে পর্যবেক্ষণ ও কনট্যাক্ট ট্রেসিং কর্মসূচীতে সামিল হওয়ার মতো সিডিসি-র বিধিনিষেধকে কঠোরভাবে অনুসরণ করাকে কৃতিত্ব দিয়েছেন।

সংক্রামক ব্যাধি সংক্রান্ত চিকিৎসক ও অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল স্কুলের অধ্যাপক পিটার কলিঙ্গোন বলেছেন, বিশ্বের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে তাইওয়ান কোভিড-১৯ এর গোষ্ঠী সংক্রমণ রুখে দিতে পেরেছে।  তিনি বলেছেন, তাইওয়ানেই সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া গিয়েছে।

যদিও তাইওয়ানে সতর্কতায় বিন্দুমাত্র ঢিলে দেওয়া হয়নি। গত বৃহস্পতিবার তিন বহিরাগতের করোনা সংক্রমণের হদিশ মিলিছে। স্বাভাবিকভাবেই করোনার দাপট কাটিয়ে বিশ্বের হাতোগোনা কয়েকটি দেশের মধ্যে তাইওয়ানের অর্থনীতি এগোতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।

চিনের সঙ্গে ব্যবসা ও পর্যটন সংক্রান্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের পরও অতিমারীর মোকাবিলায় তাইওয়ানের সাফল্য নজর কেড়েছে।

জার্নাল অফ দ্য আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-এর তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর থেকেই চিনের উহান থেকে বিমানে আগত যাত্রীদের জ্বর ও নিউমোনিয়ার লক্ষ্মণ রয়েছে কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখার কাজ শুরু করেছিলেন তাইওয়ানের আধিকারিকরা।