ইসলামাবাদ: করোনাভাইরাসের প্রকোপে ত্রস্ত সমগ্র বিশ্ব। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সামাজিক মেলামেশা বন্ধের জন্য একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার। স্কুল, কলেজ, অফিস-কাছারি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নেওয়া হয়েছে লকডাউনের মতো ব্যবস্থাও। কিন্তু পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপেক্ষা করে পাকিস্তানে অনেকেই ছুটি বা পিকনিকের মেজাজে কাটাচ্ছেন। এমন মানসিকতায় ক্ষুব্ধ পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটার শোয়েব আখতার। বিষয়টিকে ছুটি বা পিকনিকের ঢঙে না দেখার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, এটা খুবই বিপজ্জনক। কিন্তু পাকিস্তানের লোকজন এসবে কর্ণপাত করছেন না।
পাকিস্তানে কোভিড ১৯ সংক্রমণের শিকার প্রায় ৮০০ জন। পরিস্থিতি রীতিমতো সঙ্গীন। কিন্তু প্রাক্তন এই পেস বোলার বলেছেন, পরিস্থিতিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না লোকজন। তারা এই সময়কে ছুটি হিসেবেই মনে করছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণে মৃতের সংখ্যা ১৩ হাজার ছাড়িয়েছে। ভাইরাস সংক্রমণ রোধ করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার লোকজনকে সংযম পালন, সামাজিক মেলামেশা বন্ধ রাখার আর্জি জানিয়েছে।  কিন্তু তাঁর দেশের মানুষের প্রতিক্রিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়ে শোয়েব বলেছেন, হুঁশিয়ারিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে লোকজন অবাধে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।
ইউটিউবে একটি ভিডিওতে শোয়েব বলেছেন, আমি আজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজে বাইরে বেরিয়েছিলাম। কারও সঙ্গে করমর্দন, আলিঙ্গন করিনি। আমার গাড়ির জানালাও বন্ধ ছিল এবং কাজ সেরে যত শীঘ্র সম্ভব বাড়ি ফিরেছি। কিন্তু বাইরে যা দেখেছি, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমি চারজনকে একটি বাইকে চড়ে যেতে দেখলাম। দেখলাম,একসঙ্গে বসে চলছে খাওয়াদাওয়া। যাতায়াতও চলছে অবাধে। এখনও কেন রেস্তোঁরা খোলা? আমরা সেগুলি বন্ধ করে দিচ্ছি না কেন?
এ ব্যাাপারে প্রতিবেশী ভারতের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেছেন, ওখানে কার্ফু জারি হয়েছে। কিন্তু এখানে আমরা যাতায়াতও বন্ধ করতে পারিনি। মানুষে মানুষে সংস্পর্শের কারণে ৯০ শতাংশ সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এরপরও আমরা বাড়িতে বসে থাকতে চাইছি না। কী করছি আমরা এটা খুবই বিপজ্জনক। এটা মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার সামিল।
রাস্তায় রাস্তায় মাানুষের ভিড় এড়াতে পাক সরকারের কাছে দেশে লকডাউন ঘোষণারও আর্জি জানিয়েছেন শোয়েব আখতার। তিনি বলেছেন, আমরা বুঝতে চাইছি না যে, করোনাভাইরাস একটা ভয়াবহ বিপদ। গরম পড়লে ভাইরাস ছড়াবে না বা অল্পবয়সীরা এতে আক্রান্ত হবে না, এমন ভুল ধারনা বিশ্বাস করবেন না। যখন সবার বাড়িতে থাকার দরকার, তখন লোকজন অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে।


শোয়েব বলেছেন, পাকিস্তান সরকারকে অনুরোধ, কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। জারি হোক লকডাউন। শহরগুলিকে লকডাউন করতে হবে। আগেভাগে লকডাউন না করে ইতালি খুব বড় ভুল করেছে। সেখানে প্রত্যেকদিন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।
মানুষকে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় দেওয়ার পর লকডাউন ঘোষণা করতে তিনি পাক সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছেন। শোয়েব আখতার বলেছেন, দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে যে, পাকিস্তানের মানুষ সতর্কতামূলক নির্দেশে কর্ণপাত করছেন না। তাঁরা পিকনিকের মেজাজ বা হুল্লোডে মেতে থাকছেন।
আরও ৪৮ ঘন্টার পর পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) চালু করা যেতে পারে বলে পেশোয়ার জুলমির মালিক জাভেদ আফ্রিদি যে মন্তব্য করেছেন, তা তীব্র সমালোচনা করেছেন শোয়েব। উল্লেখ্য, পিএসএল নকআউট পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং মঙ্গলবার দুটি সেমিফাইনাল ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল। যদিও করোনাভাইরাসজনিত পরিস্থিতিতে পাক ক্রিকেট বোর্ড টুর্নামেন্ট স্থগিত রেখেছে।