রিও ডি জেনেইরো: করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে গোঁফ গজাচ্ছে মেয়েদের! মানুষ হয়ে যাচ্ছে কুমীরের মতো! এমনই আজব বক্তব্য পেশ করেছেন জায়ার বোলসোনারো। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট এক সাক্ষাৎকারে করোনা প্রতিষেধকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছেন, ‘ফাইজারের চুক্তিতে সাফ লেখা রয়েছে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তারা দায়ী থাকবে না। তাই আপনি হঠাৎ কুমীর হয়ে গেলে সেটা আপনার সমস্যা।’


ইতিমধ্যে ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হয়ে গিয়েছে ফাইজারের করোনা প্রতিষেধকের গণ টিকাকরণ। আর যার শেষ পর্যায়ের ট্রায়াল চললে ব্রাজিলে। গণ টিকাকরণের মাঝেই ভ্যাকসিন নেওয়ার পর সামান্য কিছু ক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার খবরও পাওয়া গিয়েছে। যা নিয়েই বলতে গিয়ে বোলসোনারো বলেছেন, ‘আপনি যদি হঠাৎই সুপারম্যান হয়ে যান বা মহিলাদের হঠাৎ করেই গোঁফ গজাতে শুরু করল বা পুরুষরা শুরু করলেন মেয়েলি স্বর কথা বলতে, তাহলে কারোর কিন্তু কিছু করার নেই।’

করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাবের সময় থেকেই অতিমারীকে গুরুত্ব দিতে চাননি বোলসোনারো। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট  তথা চরম দক্ষিণপন্থী নেতা করোনাকে সামান্য জ্বর বলে হেঁয় করেছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারতের পর তৃতীয় দেশ হিসেবে ব্রাজিলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৭০ লক্ষ ছাড়িয়ে গেলেও তাঁর সেভাবে তেমন কোনও হেলদোল নেই। কোথাও গিয়ে যেন মানুষকে টিকা নেওয়া থেকে বিরত করতেই এহেন মন্তব্য করে চলেছেন তিনি।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট সাফ জানিয়ে রেখেছেন, ভ্যাকসিন তিনি নেবেন না। গত জুলাইয়ে বোলসোনারো নিজেই করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। যে প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেছেন, ‘ভ্যাকসিন পাওয়া গেলে দেশের ইচ্ছুক সবার জন্য তা দেওয়া হবে। তবে আমি ভ্যাকসিন নেব না। অনেকে বলতেই পারি আমি হয়তো নেতিবাচক উদাহরণ স্থাপন করছি। কিন্তু সেই নির্বোধদের আমি বলব, ইতিমধ্যে আমি করোনা আক্রান্ত হয়েছিলাম, অ্যান্টিবডি তো তৈরিই হয়ে গিয়েছে, আর নতুন করে প্রতিষেধক নিয়ে কী করব?’

যদিও ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্ট সেদেশের রাষ্ট্রপ্রধানের কথা উড়িয়ে টিকা নেওয়াটা বাধ্যতামূলক বলে জানিয়ে রেখেছে। তবে সঙ্গে তাদের সংযোজন, প্রতিষেধক কেউ একান্ত নিতে না চাইলে তাঁকে জোর করা হবে না। তবে কেউ টিকা না নিলে সেক্ষেত্রে প্রশাসনের হাতে ক্ষমতা থাকবে নির্দিষ্ট কোনও এলাকায় প্রবেশাধিকার কেড়ে নেওয়ার ও সেই ব্যক্তিকে নির্বাসিত করার।