নয়াদিল্লি: খাতায়কলমে যুদ্ধ বলে ঘোষণা হয়নি এখনও। কিন্তু ইজরায়েলের মাটিতে হামলা চালিয়েছে ইরান, যা নিয়ে এই মুহূর্তে উত্তাল আন্তর্জাতিক মহল। সেই আবহেই আশঙ্কার বাণী শোনাল রাষ্ট্রপুঞ্জ। তারা জানিয়েছে, ইরানের পরমাণু শক্তি কেন্দ্রে হামলা চালাতে পারে ইজরায়েল। ইরানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা নিয়ে ইজরায়েলি মন্ত্রিসভায় সোমবার বৈঠক হয়েছে বলে খবর। আর তার পরই এই আশঙ্কার কথা জানাল রাষ্ট্রপুঞ্জ। (Iran-Israel War)
পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রগুলির উপর নজরদারি চালাতে ১৯৫৭ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের অন্দরেই International Atomic Energy Agency (IAEA)-র প্রতিষ্ঠা হয়। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভা, নিরাপত্তা পরিষদে নিয়মিত রিপোর্টও জমা দেয় তারা। ইরান এবং ইজরায়েল সংঘাতে প্রমাদ গুনছে তারা। বিপদের আঁচ পেয়ে মঙ্গলবার থেকে আবারও ইরানের পরমাণু কেন্দ্রের উপর তদারকি শুরু করছে তারা।(Iran-Israel Conflict)
IAEA-র ডিরেক্টর জেনারেল রাফায়েল গ্রোসি জানিয়েছেন, নিরাপত্তাজনিত কারণে রবিবারই নিজেদের পরমাণু কেন্দ্র বন্ধ করে দেয় ইরান। সোমবার আবারও সেটি খোলা হয়। পরিস্থিতির তদারকি চলছে। স্থিতাবস্থা না ফেরা পর্যন্ত তদারকি চলব। সোমবারই ইজরায়েলের সেনাপ্রধান জানান, ইরানের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কড়া জবাব দেবেন তাঁরা। এর পাল্টা ইরান জানায়, এবার ইজরায়েলের বিরুদ্ধে এমন অস্ত্রের প্রয়োগ করবে তারা, যা আগে কখনও দেখা যায়নি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ফল বুঝতে পারবে ইজরায়েল, তাতেই প্রমাদ গুনছে আন্তর্জাতিক মহল।
আরও পড়ুন: Sarabjit Singhs Killer Shot:অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকবাজদের গুলিতে ঝাঁঝরা সরবজিৎ সিং 'খুনে' অন্যতম অভিযুক্ত
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে একপ্রস্থ আলোচনা হয়েছে। সেখানে ইরান জানায়, আপাতত সংঘাত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কোনও লক্ষ্য নেই তাদের। তবে ইজরায়েল যদি হামলা চালায়, তাহলে পাল্টা জবাব দিতে তৈরি তারা। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতারেস যদিও জানান, দু'পক্ষকেই সংযত হতে হবে। পিছু হটতে হবে দুই দেশকেই।
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামাস্কাসে ইরানের কনস্যুলেটে প্রথম হামলা চালায় ইজরায়েল, তাতে সেনা আধিকারিক-সহ বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়। সেই থেকে দুই দেশের মধ্য লাগাতার পারদ চড়ছিল। পশ্চিম এশিয়ার ভূরাজনীতিতে আরও একটি যুদ্ধের সম্ভাবনা মাথাচাড়া দেয়। শেষ পর্যন্ত শনিবার রাতে ইজরায়েলকে নিশানা করে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। ইজরায়েলের দাবি, ৩০০ ড্রোন,ক্ষেপণাস্ত্র এবং স্বয়ংক্রিয় রকেট ছোড়ে ইজরায়েল, যার মধ্যে অধিকাংশকেই প্রতিহত করতে পেরেছে তারা।
গোটা পরিস্থিতিতে মধ্যস্থতার চেষ্টা করতে দেখা যায় আমেরিকাকেও। তবে ইরান হামলা চালালে সহযোগী দেশ ইজরায়েলের পাশেই দাঁড়ায় তারা। যদিও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানান, ইরানের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক পদক্ষেপের পক্ষপাতী নন তাঁরা। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ইচ্ছাকৃত ভাবে আমেরিকাকে ইরানের বিরুদ্ধে ভিড়িয়ে দিতে চাইছে বলে নাকি পেন্টাগনের সঙ্গে বৈঠকে উদ্বেগও প্রকাশ করেন বাইডেন, আমেরিকার সংবাদমাধ্যম অন্তত তেমনই জানিয়েছে।