কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, রুমা পাল, আবির দত্ত, কলকাতা : জাতীয় রাজনীতিতে জনতা পার্টির (BJP) যুগই হোক কিংবা বাংলায় যুক্তফ্রন্ট, অতীতে কংগ্রেসকে ক্ষমতাচ্যূত করতে আদর্শগত ফারাক পাশে রেখেই একজোট হয়েছিল বিভিন্ন দল। বাংলায় শাসকদল তৃণমূলকে হারাতে কি তেমনই কোনও মঞ্চ গড়ার বার্তা দিতে চাইলেন কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ কৌস্তভ বাগচী? তৃণমূল বিরোধী বিকল্প রাজনীতি বলতে ঠিক কী বোঝাতে চাইলেন তিনি? শত্রুর শত্রু, বন্ধু! রাজনীতির এই ফর্মুলার কথাই কি বোঝাতে চাইলেন কৌস্তভ? ঠিক কী বলেছেন কৌস্তব? (Kaustav Bagchi) কংগ্রেস নেতা বলেছেন, 'একটা বিকল্প রাজনীতির খুব প্রয়োজন। তৃণমূলকে হঠানো যে রাজনীতির ওয়ান পয়েন্ট অ্য়াজেন্ডা হবে'
ইদানীংকালে যে কথা বারবার শোনা গেছে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) কিংবা সুকান্ত মজুমদারের মুখে। প্রদেশ কংগ্রেস নেতা
কৌস্তভ বাগচী বলেন, ' রাজনৈতিকভাবে বিজেপি বা কংগ্রেসের আদর্শগত তফাৎ আছে বটে। কিন্তু একটা জিনিস, সেটা হচ্ছে একটা কমন অ্যাজেন্ডা, যেখানে তৃণমূলকে উৎখাত করার অ্যাজেন্ডাটা হয় যদি, সেই ক্ষেত্রে আমার কোনও ছুৎমার্গ নেই, এই সমস্ত বিষয়ে। মানে অরাজনৈতিকভাবে কোনও জায়গায় একসাথে মিছিলে হাঁটলাম, বা কোনও কিছু এতে...কোনও ছুৎমার্গ নেই। এই রাজ্য়ে তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতা করা মানে কংগ্রেস নিজের সুইসাইড করা।' তিনি আরও বলেন, 'চোর যে পশ্চিমবঙ্গেও চোর, চোর সে দিল্লিতেও চোর, চোর সে বম্বেতেও চোর।'
বিধানসভা ভোটের (Vidhan Sabha Election) পর কলকাতা পুরসভা হোক কিংবা রাজ্য়জুড়ে শতাধিক পুরসভা...বিধানসভা-লোকসভা উপনির্বাচন, একের পর এক ভোটে হারতে হয়েছে বিজেপিকে। উল্টোদিকে তৃণমূলের সঙ্গে সিপিএম ও প্রদেশ কংগ্রেসের লড়াইও তুঙ্গে উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটেই বারবার ইঙ্গিতপূর্ণ ডাক শোনা গেছে শুভেনদু-সুকান্তদের গলায়।
এর আগে শুভেন্দু অধিকারীর মুখেও শোনা গিয়েছিল এমনই সুর। বিরোধী দলনেতা গত জুলাই মাসে বলেছিলেন, ' নিচের তলার সমর্থকদের প্রতি আমার সহানুভূতি। তাদেরকে আমার ওপেন ডাক, আসুন ভারতীয় জনতা পার্টির সাথে এসে লড়াই করুন। আর যদি ভারতীয় জনতা পার্টিতে আসতে আপনাদের অসুবিধা হয়, আপনারা এমন প্ল্যাটফর্ম পশ্চিমবঙ্গে তৈরি করুন, তৃণমূল কোম্পানির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াই করতে পারবেন। নো ভোট টু মমতা। এই স্লোগানে আপনারা মন খুলে বলতে পারবেন'
এখন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলছেন, ' আজকে আমি কংগ্রেসের পুরনো কর্মীদের বলব, যদি সত্যিই তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়তে চান, তাহলে কংগ্রেস উপযুক্ত জায়গা নয়, বিজেপিতে আসুন'
আর কৌস্তভ বাগচী এখন বলছেন, ' রাজনীতি তো সম্ভাবনার শিল্প। কবে কী হবে, সে তো দেখা যাবে। সময় বলবে। কিন্তু, এখনই কোনও সম্ভাবনা আছে বলে, সেটা এখনই ব্যক্ত করছি না। কিন্তু, হয়তো হতেও পারে কোনও সময়। আমি বারবার বলছি, পশ্চিমবঙ্গে একটা বিকল্প রাজনীতির খুব প্রয়োজন'
এই হাওয়ায় তৃণমূলের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলছেন. 'ও আসলে ইট পেতে রাখছে। অধীরকে দিল্লির কম্যান্ড মানতেই হবে'
শেষ অবধি কী হবে? লোকসভা ভোটে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট হয়, না কি সিপিএমের হাত ধরেই থাকে কংগ্রেস, সেটা দেখা অবধি কি কৌস্তভ বাগচী অপেক্ষা করবেন? জটিল প্রশ্নের সহজ উত্তর হয় না।