নয়াদিল্লি: ইজরায়েল বনাম হামাস যুদ্ধ চলছিলই। সেই আবহেই নয়া সঙ্কট হাজির। ইজরায়েলকে লক্ষ্য করে হামলা চালাল ইরান। এর ফলে পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি যেভাবে তপ্ত হয়ে উঠছে, সেই নিয়ে এবার উদ্বেগ প্রকাশ করল ভারত। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইতি টেনে অবিলম্বে শান্তি ফেরানোর পক্ষে সওয়াল করল দিল্লি। ইরান এবং ইজরায়েল যাওয়া থেকে ভারতীয়দের বিরত থাকতেও বলা হল। (Israel Iran War)
ইরান এবং ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে রবিবার উদ্বেগ প্রকাশ করে দিল্লি। বিদেশমন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, 'ইজরায়েল এবং ইরানের মধ্যে শত্রুতা যেভাবে বেড়ে চলেছে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন আমরা। এতে গোটা অঞ্চলের শান্তি এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকি বাড়ছে। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির অনুরোধ জানাচ্ছি আমরা। দু'পক্ষই সংযত হোক, হিংসার রাস্তা থেকে সরে গিয়ে কূটনৈতিক পথ ধরুক'। (Israel Iran Conflict)
বিদেশ মন্ত্রক আরও জানায়, ইরান এবং ইজরায়েলে যে ভারতীয়রা রয়েছেন, তাঁদের নিরাপত্তার দিকটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। সেখানে ভারতীয় দূতাবাস সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।- ওই অঞ্চলের নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। এর আগে, রবিবার বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গেও ইরান-ইজরায়েল সংঘাত নিয়ে কথা বলেন।
ভারতীয়দের জন্য আলাদা করে নির্দেশিকাও জারি করেছে বিদেশমন্ত্রক, তাতে বলা হয়েছে, ‘পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ইরান বা ইজরায়েলে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে ভারতীয়দের। যে সমস্ত ভারতীয় এই মুহূর্তে ওই দুই দেশে রয়েছেন. দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে নাম নথিভুক্ত করান। নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন হোন। খুব প্রয়োজন না পড়লে বাইরে অযথা ঘোরাফেরা না করাই শ্রেয়’।
ইরান এবং ইজরায়েলের যুদ্ধ পরিস্থিতির তীব্র নিন্দা করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতারেস। তিনি বলেন, "বর্তমানে পরিস্থিতি যে ধ্বংসাত্মক আকার ধারণ করেছে, তাতে গোটা অঞ্চল জুড়ে কী বিপদ নেমে আসতে পারে ভেবে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন আমি। দুই পক্ষকেই বলছি, সংযত হন। অন্যথায় পশ্চিম এশিয়া জুড়ে বেনজির সামরিক সংঘাত দেখা দিতে পারে। আরও একটি যুদ্ধ সওয়ার ক্ষমতা নেই পৃথিবীর।"
সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে ইজরায়েল হামলা চালানোর পর থেকেই মধ্যস্থতার চেষ্টা করছিল আমেরিকা। ইরান যখন পাল্টা আক্রমণের হুঁশিয়ারি দেয়, সেই সময়ও দীর্ধদিনের সহযোগী দেশ ইজরায়েলের পাশে থাকার কথাই জানিয়েছিল তারা। এদিন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, ইরান যে হামলা চালিয়েছে, সেই নিয়ে G-7 দেশগুলির (কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, ব্রিটেন, আমেরিকা) রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। কূটনৈতিক ভাবে সমস্যা সমাধানের রাস্তা বের করতে চেষ্টা করবেন, যাতে দুই দেশের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। ইজরায়েলের প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গেও ফোনে কথা হয়েছে বাইডেনের। ইজরায়েলের নিরাপত্তায় আমেরিকা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানান তিনি।