শ্রীনগর: দীর্ঘ ১০ বছর পর জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন, তাতে এবারও সরকার গঠন করতে পারব না বিজেপি। তাদের হারিয়ে উপত্যকায় ক্ষমতাদখলের পথে কংগ্রেস এবং ন্যাশনাল কনফারেন্স। বিকেল ৫.৩০টা পর্যন্ত সেখানকার ৯০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৪৯টি আসনে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস এবং ন্যাশনাল কনফারেন্স জোট। ২৯টিতে এগিয়ে বিজেপি। তিনটি আসনে এগিয়ে মেহবুবা মুফতির পিপলস্ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। অন্যান্যরা এগিয়ে রয়েছেন ন'টি আসনে। আপাতত ন্যাশনাল কনফারেন্সের ওমর আবদুল্লাই ফের একবার জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন। (Jammu And Kashmir Elections 2024)


এখনও পর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীরের ৪২টি আসনে একাই এগিয়ে রয়েছে ন্যাশনাল কনফারেন্স। তাদের জোটসঙ্গী কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে ছয়টি আসনে। বিজেপি ২৯টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। পিডিপি তিনটি, জম্মু ও কাশ্মীর পিপল কনফারেন্স একটি, সিপিএম একটি, আম আদমি পার্টি একটি এবং নির্দল প্রার্থীরা সাতটি আসনে এগিয়ে রয়েছেন। একেবারেই আশানুরূপ ফল করতে পারেনি পিডিপি। মেহবুবা-কন্যা ইলতিজা নিজে পিছিয়ে পড়েছেন। এবারে উপত্যকায় একক ভাবে লড়াই করেছিল পিডিপি। কিন্তু জাতীয় স্তরে তারা I.N.D.I.A-তে শামিল। ফলে উপত্যকায় জোট সরকারে তারা যোগ দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। (Jammu And Kashmir Assembly Elections)


ফলাফল সামনে আসার পর এদিন ওমরকে পাশে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রবীণ নেতা, উপত্যকার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুখ আবদুল্লা। তিনি বলেন, "১০ বছর পর মানুষ আমাদের বেছে নিয়েছেন। আল্লাহ-র কাছে প্রার্থনা, আমরা যেন মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারি। পুলিশ নয়, মানুষের রাজত্ব তলবে। নিরীহদের জেলমুক্ত করার চেষ্টা চাসাব আমরা। সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতা ফিরে পাবে। হিন্দু এবং মুসলিমদের মধ্যে বিশ্বাসের বুনন আরও মজবুত করে তুলতে হবে আমাদের।"


জম্মু ও কাশ্মীর যাতে পুনরায় রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পায়, সেব্যাপারে জাতীয় স্তরে I.N.D.I.A-র শরিকদের সহযোগিতা সম্পর্কেও এদিন আশা প্রকাশ করেন ফারুখ।  মুখ্যমন্ত্রীর আসনে কে অধিষ্ঠিত হবে জানতে চাইলে, ছেলের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ করে বলেন, "ওমর আবদুল্লা মুখ্যমন্ত্রী হবেন।" এর আগে, ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত উপত্যকার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ওমর। তিনি এ দিন উপত্যকার মানুষকে ধন্যবাদ জানান। 


এদিন ওমর বলেন, "এখনও সম্পূর্ণ ফলাফল সামনে আসেনি। এলে তার পর কথা বলব। তবে ন্যাশনাল কনফারেন্স যেভাবে জয়ী হয়েছে, ভোটারদের কাছে কৃতজ্ঞ আমরা। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সমর্থন পেয়েছি। আমরা যে এর যোগ্য, তা প্রমাণ করে দেখাব।" কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার কথা উঠলে বলেন, "যাঁরা এতদিন সমর্থন করতেন না, তাঁরাও ন্যাশনাল কনফারেন্সকে ভোট দিয়েছেন। বিজেপি-র হাত থেকে নিস্তার পেতে, ষড়যন্ত্রমুক্ত হতে আমাদের সুযোগ দিয়েছেন। আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ মানুষের কাছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবি জানাচ্ছি না আমি। দল এবং শরিকরাই সিদ্ধান্ত নেবেন।"


নিজের দল ভাল ফল না করলেও, উপত্যকাবাসী স্থিতিশীল সরকারের পক্ষে ভোট দিয়েছেন বলে এদিন মন্তব্য করেন মেহবুবাও। ২০১৯ সালে বিজেপি-র সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গড়েছিলেন মেহবুবা। কিন্তু ২০১৮ সালে বিজেপি সমর্থন তুলে নিলে মেহবুবার সরকার পড়ে যায়। এদিন ফলাফল প্রকাশের পর কংগ্রেস নেতা পবন খেরা জানিয়েছেন, জম্মু ও কাশ্মীর তাঁদের কাছে আজও রাজ্য। জয়রাম রমেশ জানিয়েছেন, জম্মু ও কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়াকে প্রাধান্য দেবে তাঁদের জোট সরকার।