তিরুঅনন্তপুরম: উৎসব চলাকালীন হঠাৎ বিপত্তি। আতসবাজি বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল কেরল। মাঝরাতে সেখানকার মন্দিরে বিস্ফোরণটি ঘটে। এই ঘটনায় ১৫০-র বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। আগুনে ঝলসে গিয়েছেন অনেকে। এর মধ্যে আট জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে। মন্দির চত্বের মজুত করে রাখা আতসবাজির স্তূপে বিস্ফোরণটি ঘটে বলে জানা গিয়েছে। (Kerala Temple Cracker Accident)


গতকাল রাত ১২.৩০টা নাগাদ কাসারাগড় জেলার আঞ্জুতামবলম বীরেকাভু মন্দিরে এই ঘটনা ঘটে। সেখানে থেইয়াম উৎসব চলছিল। বহু মানুষ ভিড় করেছিলেন অত রাতেও। ঘটনাস্থল থেকে যে ছবি এবং ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে ভক্তিভাবে উদ্বেল জনসাধারণ পূজা-অর্চনা-ভজন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। সেই সময়ই তীব্র শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। বিধ্বংসী আগুনের তেজে ধাঁধা লেগে যায় চোখে। (Kerala Firecrackers Mishap)


প্রত্যক্ষদর্শীরা জাবিয়েছেন, উৎসব উদযাপনে গভীর রাতে আতসবাজি পোড়ানোর পরিকল্পনা ছিল। মন্দির চত্বরে মজুত করা ছিল চিনা আতসবাজি। কোনও ভাবে সেখানে আগুন ধরে যায় এবং তা থেকেই বিস্ফোরণ ঘটে বলে দাবি। বিস্ফোরণ হওয়া মাত্রই মন্দির চত্বরে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। প্রাণ বাঁচাতে এদিক ওদিক ছুটোছুটি করতে দেখা যায় সাধারণ মানুষকে। চিৎকার, কান্না শোনা যায়। 



স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রথমে তীব্র শব্দে বিস্ফোরণ শোনা যায়। এর পর আগুন আর ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় চারিদিক। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সকলে। হুড়োহুড়িতে, ধাক্কাধাক্কিতেও অনেকে চোট পান। আহতের দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। মন্দিরের এক আধিকারিক সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, উৎসবে যোগ দিতে প্রতি বছরই ভিড় করেন বহু মানুষ। ভিড় সামাল দিতে বিশেষ ব্যবস্থা থাকে। এবারও তার অন্যথা হয়নি। একটি তাঁবুতে আতসবাজি জমা করে রাখা হয়েছিল। সেখানে কোনও ভাবে আগুন লেগে থাকবে বলে দাবি তাঁর।


এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, উৎসব উপলক্ষে প্রচুর মানুষ ভিড় করলেও, ছিমছাম ভাবেই উৎসব পালিত হয় প্রতিবছর। এত বাজি ফাটানোর রেওয়াজ নেই। তাই মন্দিরের উৎসবে এত পরিমাণ আতসবাজি মজুত রাখা হল কেন, সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কেন যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করা হল না, প্রশ্ন স্থানীয়দের। ঘটনাস্থলে পৌঁছন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। পুলিশের বিরাট বাহিনীও পৌঁছেছে। কী থেকে আগুন লাগল, তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। 


চলতি সপ্তাহের শুরুতেই কেরল পুলিশ এফআইআর দায়ের করে। আগামী বছর এপ্রিলে ত্রিশূর পুরম উৎসব রয়েছে। তার আগে ওই উৎসব ঘিরে  অপরাধমূলক, সাম্প্রদায়িক অশান্তি ছড়ানোর পরিকল্পনা চলছে বলে অভিযোগ জমা পড়ে। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের দাবি, বিরোধীরা ইচ্ছাকৃত ভাবে বিষয়টিতে বাড়িয়ে দেখাচ্ছেন।