ধুনুচি নৃত্য আমাদের রাজ্যের প্রাচীন পরম্পরা। যে কোনও পুজো প্যান্ডেলে সন্ধের সময় হয় এই নাচ। মাটির সরায় রাখা থাকে নারকেলের ছোবড়া, জ্বলন্ত কয়লা, কর্পূর, ধূপ আর যজ্ঞের নানা সামগ্রী। এরই নাম ধুনুচি। তা হাতে তুলে শুরু হয় নাচ। অনেকে দুহাতে দুটো ধুনুচি নিয়ে, আবার মুখেও নিয়ে নাচ শুরু করেন। সঙ্গে বেজে ওঠে পুজোর ঢাক, কাঁসি।
মূর্তিপূজক এই জাতির শক্তিপূজার ঐতিহ্য বয়ে চলে প্রাচীন ধুনুচি নাচ। মনে করা হয়, এর সঙ্গে মহিষাসুর বধের সম্পর্ক আছে। পুরাণে রয়েছে, অতি বলশালী মহিষাসুরকে হত্যার জন্য দেবতারা মা দুর্গাকে জাগিয়ে তোলেন। মা অসুর বধের আগে নিজের শক্তি বাড়ানোর জন্য ধুনুচি নৃত্য করেন। আজও চলছে সেই পরম্পরা। সপ্তমীর সন্ধে থেকে শুরু হয় এই নাচ, চলে অষ্টমী, নবমীতেও। ধুনুচিতেই হয় মা দুর্গার আরতি।
রাজ্যের প্রতিটি প্যান্ডেলে এই একুশ শতকেও একইভাবে চলে ধুনুচি নাচ। এই নাচের কোনও ক্লাস, কোনও প্র্যাকটিস হয় না, একজনকে নাচতে দেখে অন্যরাও এগিয়ে আসেন। বেজে ওঠে ঢাকের বাদ্যি। ধোঁয়ায় ধোঁয়ায় ঢেকে যায় প্রতিমা। মায়ের সামনে শুরু হয় বাংলার ধুনুচি নাচ।