ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: আহিরীটোলার ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই নতুন জীবন। সন্তান হারানোর যন্ত্রণার মধ্যেই সন্তানের জন্ম। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারের পরেই সন্তানের জন্ম দিলেন মহিলা। আরজি কর হাসপাতালে সুস্থ শিশুকন্যার জন্ম। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শিশু, মা দু’জনই স্থিতিশীল।
সাত সকালে হঠাৎ বিকট শব্দ। এক নাগাড়ে বৃষ্টিতে আহিরীটোলা স্ট্রিটে ভেঙে পড়ে জরাজীর্ণ বাড়ি। পুজোর আগে খালি হয় মায়ের কোল। ভাঙা বাড়ির নিচে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় দু’বছরের শিশুকন্যা ও তার দিদার। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে কোনও রকমে উদ্ধার করা হয় অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ও তাঁর স্বামীকে। আর বিকেলে সেই বাড়িতেই এল নতুন সদস্য। খালি হওয়া মায়ের কোল ফেল ভরে উঠল। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সময়ের আগে শিশুর জন্ম হওয়ায় বিশেষ নজরে রাখা হয়েছে। তবে মা ও সন্তান দুজনের অবস্থাই স্থিতিশীল।
নিম্নচাপের প্রভাবে রাত থেকেই বৃষ্টি চলছে। তার মধ্যেই, বুধবার সকাল পৌনে সাতটা নাগাদ, হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে আহিরীটোলা স্ট্রিটের এই দোতলা বাড়িটি। ধ্বংসস্তূপের তলায় আটকে পড়েন এক শিশু-সহ ১৭ জন। প্রাথমিকভাবে স্থানীয়রাই উদ্ধারকাজে হাত লাগান। দেওয়াল ভেঙে কয়েকজনকে উদ্ধার করা হয়। যেন সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা। উদ্ধার হওয়ার পর, মহিলার চোখে-মুখে স্পষ্ট আতঙ্কের ছাপ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন, পুলিশ, দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর জওয়ানরা। পরে, দুর্ঘটনাস্থলে আসে NDRF’ও।
আরও পড়ুন: শ্বাসকষ্ট, জ্বর! উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ফের ২ শিশুর মৃত্যু
কলকাতা পুলিশের সিপি’র নেতৃত্বে চলে উদ্ধারকাজ। গ্যাস কাটার দিয়ে কেটে। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে আটকে পড়াদের উদ্ধারের কাজ শুরু হয়। ঘটনাস্থলে আসেন, দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু ও স্থানীয় বিধায়ক এবং নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজাও। পরে, ঘটনাস্থলে আসেন কলকাতা পুরসভার বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্সের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমও। প্রায় সোয়া দু’ঘণ্টার চেষ্টায়, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে গৃহকর্তা ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে উদ্ধার করা হয়। প্রায় চার ঘণ্টা পরে, অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় প্রৌঢ়া ও শিশুকে। গুরুতর জখম প্রৌঢ়া ও শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। বিপজ্জনক বাড়িটি ভেঙে ফেলা হবে বলে জানিয়েছে পুরসভা।