কলকাতা: কৃষকদের (Farmer Protest) বিভিন্ন দাবি দাওয়াকে সামনে রেখে সিঙ্গুরে (Singur) বিজেপির (BJP) ধর্নার আজ তৃতীয় দিন। তবে দাবি পূরণ না হলে নবান্ন (Nabanna) অভিযানের ডাক দিয়েছেন বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Mzumdar)। শীতকালে ঘুরতে যাবে, উঁচু থেকে দেখতে ভাল লাগে, কটাক্ষ তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh)। 


তৃতীয় দিনে ধর্নায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Mzumdar), শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari), অগ্নিমিত্রা পাল (Agnimitra Paul)। তিনদিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি চললেও যোগ দেননি সিঙ্গুরের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। কর্মসূচির কথা জানতেন না বলে দাবি রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যর। ওঁর ছেলে ফোন ধরেছিল, কর্মসূচির কথা জানতেন, পাল্টা দাবি সুকান্ত মজুমদারের। সিঙ্গুরের এই ধর্না অবস্থানে যোগ দেননি হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। কর্মসূচির কথা দেরিতে জেনেছি, সংসদের অধিবেশনে দিল্লিতে থাকায় যোগ দিতে পারিনি, জানিয়েছেন লকেট।


এদিন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, নবান্ন পর্যন্ত পদযাত্রা হবে, কিষান মার্চ হবে ১৪ তলা পর্যন্ত। এ প্রসঙ্গে পালটা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, নবান্ন অভিযান মানে দেখতে যাচ্ছে শীতকালে, দূর থেকে দেখবে, এর বাইরে কিছু করার নেই।


এক যুগ আগে সিঙ্গুর আন্দোলনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মহাকরণ পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছিল বলে, মনে করেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। আজ মুখ্যমন্ত্রীর দফতর গঙ্গাপাড়ের নবান্নে। এবার সেই সিঙ্গুর থেকেই নবান্ন অভিযানের ডাক দিল বিজেপি। 


হাতিয়ার কৃষক আন্দোলন!২২ থেকে ২৪ ডিসেম্বর কিষাণ মোর্চার নেতৃত্বে প্রত্যেক বিডিওর কাছে ডেপুটেশন দেওয়া হবে। ৫ থেকে ১০ জানুয়ারি জেলায় জেলায় হবে পদযাত্রা। বৃহস্পতিবার সিঙ্গুরে তিন দিনের ধর্নামঞ্চ থেকে এই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। যদিও নবান্ন অভিযানের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়নি।



এদিন সুকান্ত মজুমদার আরও বলেন, ৫ তারিখ আমি শুভেন্দু- দিলীপদা একজন ঘাটালে বর্ধমানে ও আরামবাগে থাকব, ১০ তারিখ মার্চ শেষ হবে এক এক জেলায়। একেক দিন এক এক জেলায়, ১০ জেলা জলপাইগুড়িতে আমি, মালদায় শুভেন্দু। 



সিঙ্গুরে তিন দিনের ধর্নায় প্রথমে অনুমতি নিয়ে জটিলতা দেখা দিলেও পরে তা কেটে যায়। এদিন ধর্না মঞ্চে সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ রাজ্য নেতৃত্বের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা-নেত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। 
ছিলেন কয়েকজন কৃষকও। যাঁদের সঙ্গে দুপুরের খাবার খান বিজেপি নেতারা। 


ধর্নামঞ্চে অনুমতি দেওয়া নিয়ে যখন মমতার প্রশাসনের দিকে আঙুল তুললেন শুভেন্দু অধিকারী, তখন অন্যদিকে কলকাতায় পুরভোটের প্রচারেও সিঙ্গুর আন্দোলনের কথা উঠে এল তৃণমূল নেত্রীর গলায়।


এ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, সিঙ্গুর আন্দোলনের কথা যদি ভুলে না যাই, চাষির অধিকারের জন্য। একটা ট্রাক আসছিল...অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছি। এইসব ঘটনা আমি ভুলে যাইনি।


এদিকে সিঙ্গুর থেকে যেদিন নবান্ন অভিযানের ডাক দিলেন বিজেপি নেতারা, সেদিন ফের তাঁদের অস্বস্তি বাড়ালেন বিধানসভা ভোটে বিজেপির পরাজিত প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। যাঁকে তিন দিনের ধর্না কর্মসূচিতে একদিনও ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ। সব মিলিয়ে পুরভোটের আবহে, রাজ্য রাজনীতিতে ফের প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল সিঙ্গুর।