বউবাজার: আবারও একই কায়দায় এটিএম থেকে গায়েব লক্ষ লক্ষ টাকা। এবার ঘটনাস্থল বউবাজার থানা এলাকা। এখানেও এটিএম লুঠের অভিযোগ উঠল। ঘটনার তদন্তে নেমেছে লালবাজারের গোয়েন্দা শাখা। গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ ও সিআর অ্যাভিনিউয়ের সংযোগস্থলে রয়েছে বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএম।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১৪ মে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে মাত্র তিনঘণ্টার মধ্যে অপারেশন চলে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ওই সময়ের মধ্যে মাস্ক ও টুপি পরে এটিএমে ঘনঘন ঢুকছে, বেরোচ্ছে কয়েকজন। পরে হিসেব নিকেশের সময়ে দেখা গিয়েছে ম্যান ইন দ্য মিডল অ্যাটাক পদ্ধতিতে ওই এটিএম থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে ২৫ লক্ষ ২০ হাজার টাকা।
পুলিস বলছে, এর আগে উত্তরপ্রদেশের ফরিদাবাদে এভাবেই একাধিক এটিএম লুঠের ঘটনা ঘটেছে। ফরিদাবাদ-গ্যাংয়ের একজনকে কলকাতার এটিএমে দেখা গিয়েছে বলেও পুলিশের দাবি। সূত্রে খবর, নজরে রয়েছে এটিএম রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থার কর্মীরাও। গত ৫ বছরে কারা ওই কাজে যোগ দিয়েছে, কারা কাজ ছেড়ে দিয়েছে, সেইসমস্ত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
গতকালও এমন তিনটি ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। অভিযোগ, ১৪ থেকে ২২ মে-র মধ্যে নিউ মার্কেট, যাদবপুর ও কাশীপুর থানা এলাকার এটিএম থেকে গায়েব হয়ে গিয়েছে ৩৯ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। যদিও কোনও এটিএমের গায়ে আঁচড় পর্যন্ত লাগেনি। সাইবার বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ঘটনার পিছনে হ্যাকারদের বিশেষ কারসাজি।
পুরোপুরি অক্ষত এটিএম। বিশেষ যন্ত্র বসিয়ে অভিনব উপায়ে লক্ষ লক্ষ টাকা গায়েব করার অভিযোগ উঠছে। কীভাবে ঘটছে এমন ঘটনা? খতিয়ে দেখার পাশাপাশি, সিস্টেম আপগ্রেড করে এই ধরনের জালিয়াতি ঠেকানোয় জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তদন্তকারীরা মনে করছেন, সবার অলক্ষ্যে জালিয়াতরা বিশেষ যন্ত্র লাগিয়ে দিচ্ছে এটিএমে। তারপর বিশেষ সফটওয়্যারের সাহায্যে ব্যাঙ্কের সঙ্গে এটিএমের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে এটিএমের নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি নিজেদের হাতে নিয়ে নিচ্ছে। তারপরই গায়েব করছে টাকা।
সাইবার বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, একে বলে ম্যান ইন দ্য মিডল অ্যাটাক। কী এই পদ্ধতি? এটিএম বক্স এবং ব্যাঙ্কের মধ্যে হ্যাকার ঢুকে ম্যালওয়ার লাগিয়ে নির্দেশ দেবে, সেভাবেই কাজ করবে সংশ্লিষ্ট এটিএমটি। সাইবার বিশেষজ্ঞ অভিষেক মিত্রর কথায়, কৃত্রিম সার্ভার তৈরি করে এই কাজ হচ্ছে।