কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: একদিকে আবাহনের ঝলমলে আলো, অন্যদিকে অবহেলার অন্ধকার! শারদ-ষষ্ঠীতে যখন দিকে দিকে দেবীর বোধন, তখন এই শহরেই দুর্গতি খোদ দুর্গতিনাশিনীর। সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের পার্কে ভেঙে পড়েছে দুর্গার ইনস্টলেশন। ভুল হয়ে গেছে, রি-ইনস্টল করা হবে। জানিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। 


করোনা আবহেও মণ্ডপে মণ্ডপে মানুষের ঢল। আলোর রোশনাইয়ে ঝলমলে চারপাশ! উৎসবে মেতেছে কলকাতা। কিন্তু এই শহরেরই ধরা পড়েছে উল্টো এক ছবি, বিভিন্ন পুজো কমিটি যখন নানা রূপে প্রতিমাকে তুলে ধরেছে, সেখানে কলকাতার বুকেই সবার অলক্ষ্যে রয়ে গেছেন এই উমা। 


পুজো শুরু হয়ে গেছে। উৎসব শুরু হয়েছে তার আগে থেকেই। চারদিকে যখন আলোর রোশনাই, ঠাকুর দেখার আকুতি। সেখানে মাতৃমূর্তি অবহেলায় পড়ে আছে সাদার্ন অ্যাভিনিউতে। গোলপার্ক থেকে সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের দিকে একটু এগোলেই পার্কের ঘেরাটোপে রয়েছে দুর্গার ইনস্টলেশন। স্থানীয় সূত্রে খবর, শহরের সৌন্দর্যায়নে কয়েক বছর আগে এই প্রতিমা ইনস্টল করা হয়েছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ে বিবর্ণ হয়েছেন উমা। সিমেন্টের চাতালের উপর রাখা কাঠামো ভেঙে পড়েছে। 


প্রতিমার পাশে থাকা অন্যান্য মূর্তিও অর্ধেক ভেঙে পড়ে আছে। শারদ-শহরে, ব্যস্ত রাস্তার পাশে এমন দৃশ্য নজর এড়িয়েছে অনেকের। তার মধ্যেও ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে যে দু-একজনের চোখে পড়েছে এই দৃশ্য, তাঁরা তো হতবাক।


যাদবপুরের বাসিন্দা সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, আমরা যাতায়াত করতে গিয়ে দেখি, খুব খারাপ লাগছে। সারানোর ব্যবস্থা করা উচিত। অন্যদিকে চণ্ডীগড়ের বাসিন্দা শাওন দে জানিয়েছেন, আমি চণ্ডীগড়ে থাকি। কলকাতায় আসি, খুব বাজে লাগছে, ঠাকুর দেখতে বেরচ্ছি, আর এখানে এভাবে পড়ে আছেন প্রতিমা। আমাদের মুখে দুর্গা মূর্তির এমন অবহেলার কথা শুনে নড়েচড়ে বসেছে কলকাতা পুরসভা। 


কলকাতা পুরসভার বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স, চেয়ারপার্সন, ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, 
ওটা আমি দেখলাম, চারদিকে গাছ আছে। কোনও কারণে চোখে পড়েনি। ভুল হয়ে গেছে। আমি আজই সরিয়ে দিতে বলেছি। ওটা তুলে নিয়ে গিয়ে রি ইনস্টল করে দেবে।


উৎসব আসে, উৎসব যায়। রীতি মেনে নিরঞ্জনের পাশাপাশি, কিছু মূর্তিকে সাজিয়ে রাখা হয় শহরের সৌন্দর্যায়নের কারণে। কিন্তু উৎসবের শহরে দুর্গাকে অবহেলায় থাকতে দেখে কেউ কেউ বলছেন, শুধু ইনস্টলেশন নয়, রক্ষণাবেক্ষণ ও নজরদারিও প্রয়োজন।