কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, হিন্দোল দে,কলকাতা: শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ে বেনজির পরিস্থিতির পর প্রশ্ন উঠছে, এর দায় কার? সোমবার যখন অশান্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয় তখন, অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত বাড়ি থেকেই বেরোলেন না। জানালেন তিনি অসুস্থ! শিক্ষামন্ত্রী আগেই উপাচার্যের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তবে, এদিন ফের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় উপাচার্যকে তীব্র নিশানা করেছেন।
শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ে এই নজিরবিহীন পরিস্থিতির পর প্রশ্ন উঠছে, উপাচার্যর উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হল কীভাবে? দায় কার? যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক SFI সমর্থক বলেছেন, দায় নিতে হবে উপাচার্যকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ২টো ছাত্রের উপর গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটা তো খুনের চেষ্টা বলে মনে করি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেন ব্রাত্য বসুর গ্রেফতারির FIR করা হয় সেটাও আমাদের দাবি।'
সোমবারও যখন বিশ্ববিদ্য়ালয় উত্তপ্ত তখন, অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য বাড়ি থেকেই বেরোলেন না। জানালেন তিনি অসুস্থ! বিশ্ববিদ্য়ালয়ের ছাত্ররা বলছে আপনি না আসা পর্যন্ত গেট খোলা হবে না। আপনাকে জবাব দিতে হবে। কী অবস্থায় আছেন ? এবিপি আনন্দ প্রশ্নের জবাবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত বলেন, আপাতত আমাকে ডাক্তার বলেছেন বিশ্রামে কোনও অ্যাক্টিভিটির মধ্যে না থাকতে। মানসিকভাবে তো একটা প্রচণ্ড চাপ পড়েই। এবং আমার ব্লাড প্রেশার প্রচণ্ডভাবে বাড়তে থাকে। মানসিকভাবে খুবই আঘাত পেয়েছি। সভার মধ্যে আমি মঞ্চে বসেছিলাম না। অ্য়াকাডেমিক সেমিনার হয়। সেই সেমিনারে আহ্বান জানিয়েছিলেন। উপাচার্য হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী যেখানে এসেছেন ক্য়াম্পাসে তাঁর সঙ্গে দেখা করাটা আমার প্রোটোকলের মধ্যে পড়ে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের SFI সমর্থক শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এলেন না। মেল করা অন্তত উচিত ছিল। ব্রাত্য় বসু উপাচার্যের পাশে দাঁড়ালেনও সৌগত রায় আবার তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।গতকাল শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ওর কিছু করার ছিল না। উনিও অসহায় ছিলেন। উপাচার্যও তো নিগৃহীত হয়েছে। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, চাপ পড়লেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। এই উপাচার্যও তাই হয়েছে দেখতে পাচ্ছি। একটা কঠিন পরিস্থিতি যে ফেস করতে পারবে না সেরকম লোককে রাখার কী অর্থ থাকতে পারে? কঠিন দায়িত্ব পড়েছে ওমনি পালাবার চেষ্টা করছেন। আমি চাই যে উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়া হোক। আমি মনে করি উনি থাকার যোগ্য নন। এরকম দুর্বল লোককে দিয়ে চালাবে কী করে বিশ্ববিদ্য়ালয় প্রশাসন? শক্ত প্রশাসক দরকার যাদবপুরে।
অন্তর্বর্তী উপাচার্যের গলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের সুর শোনা গেলেও, বিশ্ববিদ্য়ালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ তাঁর আচরণে বেজায় ক্ষুব্ধ।যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত বলেছেন, নিশ্চয়ই না জেনেই বলেছেন। বা না বুঝে বলেছেন। বা কেউ ওকে ভুলভাবে বলেছে। আমার উপস্থিতিতে ঘটেছে বলা ভুল।' যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের SFI সমর্থক প্রত্যাশা পাল বলেন, সরিয়ে দেওয়াই উচিত।
সবমিলিয়ে যাদবপুরকাণ্ডে তোলপাড় গোটা রাজ্য।