সৌভিক মজুমদার, মনোজ্ঞা লহিয়াল, কলকাতা: ভোট পরবর্তী অশান্তি মামলায় সিবিআইকে তদন্তভার দিল কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ। আজ সকালে মামলার রায় ঘোষণা করে কলকাতা হাইকোর্ট।


রায় দিয়ে আদালত জানায়, খুন, অস্বাভাবিক মৃত্যু, ধর্ষণের মতো গুরুতর ঘটনার মামলার তদন্ত করবে সিবিআই। অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্তের জন্য সৌমেন মিত্র, সুমন বালা-সহ ৩ জনকে নিয়ে গঠন করা হয়েছে ৩ সদস্যের সিট। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নজরদারিতে কাজ করবে সিট। অন্যদিকে, মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টের প্রেক্ষিতে দুষ্কৃতীদের তালিকায় একাধিক তৃণমূল নেতার যুক্ত থাকার আবেদনও খারিজ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। 


এক নজরে কলকাতা হাইকোর্টের রায়



  • ৬ সপ্তাহ পর তদন্তের রিপোর্ট দেবে CBI এবং SIT

  • আরও একটি নতুন ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করা হবে। 

  • আর কোনও অভিযোগ থাকলে জানাতে হবে ডিভিশন বেঞ্চেই।

  • আদালতের নির্দেশ ছাড়া কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না।

  • রাজ্যের সমস্ত সংস্থাগুলি কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করবে। 

  • ক্ষতিগ্রস্তদের এখনই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।



তবে সূত্রের খবর সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার ভাবনা-চিন্তা করছে রাজ্য, এ নিয়ে আইনি পরামর্শও নিচ্ছে রাজ্য সরকার। ভোট পরবর্তী অশান্তি মামলায় আজ রায় দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। সকাল ১১টায়, ৫ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ রায়দান করা হয়। গত ৩ অগাস্ট, শেষ হয়েছিল এই মামলার শুনানি। তখন রায়দান স্থগিত রেখেছিল আদালত। 


ভোট পরবর্তী অশান্তি-মামলায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট ১৩ জুলাই জমা পড়ে কলকাতা হাইকোর্টে। কমিশনের রিপোর্টে মূল সুপারিশ ছিল, ঘৃণ্য অপরাধের তদন্তভার দেওয়া হোক সিবিআইকে। বিচারপর্ব যেন রাজ্যের বাইরে হয়। অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তাদের দিয়ে সিট গঠন করে তদন্তের সুপারিশ করা হয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে। এর পাশাপাশি, ওই রিপোর্টে বলা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে আইনের শাসন বলে কিছু নেই। আছে শাসকের আইন। দাবি করা হয়, প্রধান বিরোধী দলের সমর্থকদের ওপর প্রতিশোধমূলক হিংসা চালিয়েছে শাসকদল। 


ভোট পরবর্তী অশান্তি মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট আজ রায় দান করলেও। তার আগে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যদের নিয়েই প্রশ্ন তুলে রাজ্য সরকার। তাঁদের দাবি, কমিশনের সদস্যরা রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট। ভোট পরবর্তী অশান্তির ঘটনায় পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা মিথ্যা সাক্ষ্য সংগ্রহ করে রিপোর্ট দিয়েছেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে কুখ্যাত দুষ্কৃতীদের তালিকায় নাম রয়েছে তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের। কোন মাপকাঠিতে কমিশন ওই তালিকা তৈরি করেছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে রাজ্য সরকার।