কলকাতা: রাজ্যের ডেঙ্গি (Demgue)-ম্যালেরিয়া (Maleria) পরিস্থিতি নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা উঠে এসেছে নগরোন্নয়ন দফতরের চিঠিতে। রাজ্যের সব পুরসভার সঙ্গে বৈঠকের পরই চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, সমন্বয়ের অভাব রয়েছে সার্ভে টিম এবং পুর কর্তৃপক্ষের মধ্যে। পুরসভা এবং স্বাস্থ্য দফতরের মধ্যেও সমন্বয়ের অভাবের অভিযোগ উঠেছে।


রাজ্যস্তরে (State) পরিস্থিতির ওপর নজরদারির অভাব রয়েছে। মশার হটস্পট চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে গাফিলতিরও অভিযোগ উঠছে। মশাদমন অভিযানে গাফিলতির অভিযোগের পাশাপাশি মেডিক্যাল সার্ভিস কর্পোরেশনের সার্ভিস রিপোর্টে বলা হয়েছে সরবরাহ করা তেলও নিম্নমানের। কলকাতা-সহ ২৫ পুরসভা ডেঙ্গি প্রবণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। সব পুরসভাকেই একথা চিঠি দিয়ে জানাল নগরোন্নয়ন দফতর। 


তাপমাত্রা কমলেও কমছে না ডেঙ্গির (Dengue) দাপট। করোনা আবহে (Corona) ঘরবন্দি বহু পরিবার। ভাইরাসের বাহক মশার কামড়ে আক্রান্ত হচ্ছেন একই পরিবারের একাধিক সদস্য। তার জেরে ভিড় বাড়ছে হাসপাতালে। এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়াছে বৃষ্টির পূর্বাভাস।


ভরা অঘ্রাণেও চোখ  রাঙাচ্ছে নিম্নচাপ। আন্দামান সাগরে ঘনীভূত নিম্নচাপের জেরে সপ্তাহের শেষে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। আর এই পূর্বাভাসেই অশনি সঙ্কেত দেখছেন চিকিৎসকদের একাংশ।


তাঁদের কথা অনুযায়ী, তাপমাত্রা আগের চেয়ে কমলেও করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ডেঙ্গির প্রকোপ এখনও কমেনি। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে বৃষ্টি হলে মশাবাহিত রোগ আরও বাড়তে পারে। কারণ জমা জলেই ডেঙ্গির সংক্রমণবাহী মশার লার্ভার জন্ম হয়। 


শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রভাস প্রসূন গিরি জানিয়েছেন, তাপমাত্রা কমার পরেও মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত অনেকে হাসপাতালে আসছে। ভর্তি রয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস আছে, কিছুদিন পর নিম্নচাপ হবে। বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি আবার উদ্বেগজনক হতে পারে।


চিকিৎসক মহল সূত্রে খবর, ছোট থেকে বড়, মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন সবাই। জ্বরের উপসর্গ নিয়ে ভিড় বাড়ছে হাসপাতালে। পরীক্ষার পর দেখা যাচ্ছে, কারও ডেঙ্গি, কারও ম্যালেরিয়া। 


পার্ক সার্কাসের ইনস্টটিটিউট অফ চাইল্ড হেলথ সূত্রে খবর, সেখানে বর্তমানে ৮ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসা চলছে। বিধান চন্দ্র রায় শিশু হাসপাতালের ছবিটা আরও উদ্বেগজনক। 


বিসি রায় শিশু হাসপাতালের অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, অধিকাংশ রোগী সঙ্কটজনক অবস্থায় এলেও, তাদের সুস্থ করে বাড়ি পাঠানো হচ্ছে। 


ভাইরোলজিস্ট অমিতাভ নন্দী বলছেন, যারা আসছে, তাদের মধ্যে যে বিষয়টা দেখা যাচ্ছে ডায়েরিয়া থাকছে, প্লেটলেট কমে যাচ্ছে। গাঁটে গাঁটে শরীরের বিভিন্ন অংশে প্রবল ব্যথা। ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ম্য়ালেরিয়া আক্রান্তও প্রচুর মিলছে। বিশেষ করে ফ্যালসিফেরাম। তাতে গতানুগতিক ওষুধ কাজ করছে না।


চিকিৎসক মহল সূত্রে খবর, নভেম্বর শেষেও ডেঙ্গির এই বাড়বাড়ন্তের জন্য করোনা পরিস্থিতি একটা বড় কারণ। মারণ ভাইরাসের দাপটে ঘরের বাইরে বেরনো কমেছে। বেশিরভাগ পরিবারই ছোট ফ্ল্যাটে বন্দি। দেখা যাচ্ছে, পরিবারে একজন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলে কিছুদিনের মধ্যে অন্যরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। অর্থাৎ একই পরিবারে বাড়ছে সংক্রমণ।