রঞ্জিত সাউ, নিউটাউন: ৭০ ঊর্ধ্ব এক বৃদ্ধকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল ছেলে, বৌমা ও নাতি নাতনিদের বিরুদ্ধে। অবশেষে হাইকোর্টের নির্দেশে স্বস্তি ওই বৃদ্ধের। বাড়ি খালি করে ওই বৃদ্ধকে ঘরে প্রবেশ করিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় নিউটাউন থানার পুলিশকে। সেই মতো নিউটাউন থানার পুলিশ ওই বৃদ্ধকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর বাড়িতে ঢুকিয়ে দেয়। বাড়ি হাতে পেয়ে খুশি বৃদ্ধ।


বৃদ্ধের নাম অজিত দাস। নিউটাউন থানা এলাকার নিউ আদর্শ পল্লীতে ১৯৮৬ সালে দু কাটা জমি কেনেন তিনি। সেই জমির ওপর দোতলা বাড়ি করে বসবাস করতে থাকেন। দুবছর আগে তাঁর ছেলে বীরেন্দ্র দাস বাবার যাবতীয় দেখাশোনা ও ভরনপোষন বহন করার প্রতিশ্রুতি দেন। সেই মতো ছেলে ও তার পরিবারকে থাকার অনুমতি দেন অজিত দাস।


কিছুদিন যাওয়ার পর বৃদ্ধ লক্ষ্য করে ছেলে এবং তার পরিবারের লোকজনের আচরণের পরিবর্তন হচ্ছে এবং কর্তব্য পালন করছে এবং মাঝে মধ্যে মদ্যপান করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং মারধর করছে। এরই মাঝে একদিন তার ওই বাড়িটি রেজিস্টার করে দিতে হবে ছেলের নামে নাহলে পরিণাম খারাপ হবে বলে হুমকি দেয় বৃদ্ধকে তাঁর ছেলে। বৃদ্ধ জমি বাড়ি রেজিস্টার করে দিতে অস্বীকার করলে আরও বেশি করে অত্যাচার করতে থাকে ছেলে। ছেলের দিকে তাকিয়ে মুখ বুঁজে সহ্য করতে থাকে বৃদ্ধ।


২৪ মার্চ ২০২১ তারিখে পুত্র পুত্রবধূ তাদের ছেলে মেয়েরা বৃদ্ধকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এই অবস্থায় বৃদ্ধ তাঁর মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। ৪ এপ্রিল ২০২১ তারিখে ওই বাড়িতে গিয়ে ছেলে বৌমার কাছে বাড়ি ফেরতের আবেদন জানালে অশ্রাব্য ভাষায় বৃদ্ধকে গালিগালাজ করা হয় এবং প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়। ১ জুলাই ২০২১ তারিখে নিউটাউন থানায় অভিযোগ জানান বৃদ্ধ। এর পাশাপাশি ৩০ জুন ২০২১ তারিখে বাড়ি ফেরতের দাবি নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বৃদ্ধ।


বুধবার হাইকোর্ট রায় দেয় অবিলম্বে বাড়ি খালি করে দিয়ে বৃদ্ধ অজিত দাসকে বাড়ি ফিরিয়ে দিতে হবে। হাইকোর্টের এই নির্দেশ নিউটাউন থানায় আসার পর বৃহস্পতিবারই নিউটাউন থানার পুলিশ বৃদ্ধকে সঙ্গে নিয়ে সেই বাড়িতে গিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে দেয় পুলিশ। বাড়ি ফিরে পেয়ে খুশি বৃদ্ধ অজিত দাস।