ভোপাল: দশেরায় ‘রাবণ দহনে’র পরিবর্তে ‘শূর্পণখা’ দহনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। অপরাধ মামলা, বিশেষ করে স্বামী ও সন্তানহত্যায় নাম জড়ানো মহিলাদের ছবি দিয়ে সাজানো ১১ মাথার কুশপুতুল পোড়ানোর পরিকল্পনা ছিল। (Surpanakha Dahan)

Continues below advertisement

বিতর্ক সত্ত্বেও বিরাট আয়োজনও চলছিল সেই উপলক্ষে। কিন্তু মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট এবার সেই আয়োজন আটকে দিল। নিষিদ্ধ করা হল ‘শূর্পণখা দহন’। সেই নিয়ে কড়া মন্তব্য করল রাজ্যের সর্বোচ্চ আদালত। (Madhya Pradesh News)

মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের ইন্দৌর বেঞ্চ শনিবার ‘শূর্পণখা দহন’ নিষিদ্ধ করল। এই ধরনের আয়োজন অসাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী বলে জানিয়ে দিল আদালত।

Continues below advertisement

স্ত্রীর হাতে নির্যাতনের শিকার পুরুষদের অধিকার নিয়ে কাজ করা, ‘পৌরুষ’ নামের একটি সংগঠন এবছর দশেরায়  ‘শূর্পণখা দহনে’র আয়োজন করছিল। তারা জানায়, ১১টি মাথা বিশিষ্ট একটি কুশপুতল পোড়ানো হবে, যেগুলিতে গার্হস্থ্য খুন, জালিয়াতি, মাদক মামলায় অভিযুক্ত মহিলাদের ছবি বসানো থাকবে। 

১১টি মাথা বিশিষ্ট কুশপুতলে যে ১১ জন মহিলার ছবি রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তাতে নাম ছিল মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে স্বামী রাজা রঘুবংশীকে খুনে অভিযুক্ত সোনম রঘুবংশীর। মেরঠের মুসকান, যিনি প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুন করে নীল ড্রামে পুরে রাখায় অভিযুক্ত। নামছিল নিকিতা সিংঘানিয়া, সুস্মিতা, শশী, হংসারও।

‘শূর্পণখা দহনে’র ঘোষণা হতেই বিতর্ক মাথাচাড়া দেয়। সোনমের মা রঘুবংশী গত ২৫ সেপ্টেম্বর আদালতের দ্বারস্থ হন। জানান, তাঁর মেয়ের বিরুদ্ধে অপরাধ এখনও প্রমাণিত হয়নি। মামলা এখনও বিচারাধীন। সেই অবস্থায় প্রকাশ্য়ে মেয়ের কুশপুতুল পোড়ানোর অর্থ মেয়ের মানহানি, মানসিক ভাবে হেনস্থা করা।

শনিবার সেই নিয়ে শুনানি শুরু হলে আদালত বলে, “কারও নামে অপরাধ মামলা থাকলেও, প্রকাশ্যে তাঁর কুশপুতল জ্বালানো, তাঁকে কালিমালিপ্ত করা সংবিধান এবং দেশের আইনব্যবস্থার পরিপন্থী। গণতন্ত্রে এই ধরনের ‘প্রতীকী শাস্তি’ কাম্য নয়।” রঘুবংশী সম্প্রদায়ের তরফেও এর তীব্র বিরোধিতা করা হয়। ইন্দৌরের জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন সোনমের ভাই গোবিন্দ রঘুবংশীও। 

রাজা-হত্যা মামলায় গোড়ায় জামাইয়ের পরিবারের হয়েই সওয়াল করেন সোনমের বাড়ির লোকজন। গোবিন্দ দিদির সমালোচনাও করেন প্রকাশ্যে। কিন্তু বর্তমানে দিদির জামিনের চেষ্টা করছেন তিনি। 

যদিও ‘পৌরুষ’ সংগঠনের প্রধান অশোক দাশোরার দাবি, কোনও মহিলাকে অপমান করা তাঁদের উদ্দেশ্য নয়। তাঁর বক্তব্য, “শয়তানের কোনও লিঙ্গ হয় না। রাবণ যদি সেই সময়ের অন্যায়ের প্রতীক হন, তাহলে আধুনিক শূর্পণখাদের বিরুদ্ধেও সমাজকে রুখে দাঁড়াতে হবে। বিচারব্যবস্থার প্রতি সম্মান আছে। নিষিদ্ধ করা হয়েছে যখন কুশপুতুল পোড়ানো হবে না।” তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ফের আবেদনের ভাবনা চিন্তা করছে ‘পৌরুষ’।