চেন্নাই: বনভূমির জমি জবরদখল, পরিবেশ ও বন্যপ্রাণ ধ্বংসের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছিল আগেই। পাশাপাশি, যৌন হেনস্থার অভিযোগও সামনে এসেছে। এবার আরও বিপাকে সদগুরুর Isha Foundation. অল্পবয়সি মেয়েদের মগজধোলাই সংক্রান্ত একটি মামলায় তাদের তিরস্কারের পাশাপাশি, এযাবৎ সংস্থার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া যাবতীয় মামলার নথিপত্র চাইল মাদ্রাজ হাইকোর্ট। সদগুরুর উদ্দেশ্য নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করল আদালত। (Sadhguru's Isha Foundation)
কোয়েম্বাত্তূরের বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এস কামরাজ সদগুরুর Isha Foundation-এর বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন। জানান, তাঁর উচ্চশিক্ষিত দুই কন্যা, এক জনের বয়স ৪২, অন্য জনের ৩৯ বছর। এমন মগজধোলাই করা হয়েছে তাঁদের যে তাঁরা সব সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ছেড়ে, কোয়েম্বাত্তূরে Isha Yoga Centre-এ থাকতে শুরু করেছেন। সংস্থার তরফে পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতে দেওয়া হচ্ছে না তাঁদের। সদগুরুর সংস্থার বিরুদ্ধে যে অনিয়ম, যৌন হেনস্থার অভিযোগ রয়েছে, যত অপরাধ মামলা রয়েছে, তারও বিহিত চেয়েছেন কামরাজ। (Isha Foundation)
মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি এস সুব্রহ্মণ্যম এবং ভি শিবজ্ঞানমমের বেঞ্চে মামলাটির শুনানি চলছিল। কামরাজের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত জানায়, ওই সংস্থার বিরুদ্ধে এত অপরাধমূলক মামলা রয়েছে যেখানে, সেখানে বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনা করে দেখা উচিত। কী কী অভিযোগ রয়েছে, কোন কোন মামলা পড়ে রয়েছে, তার বিশদ তথ্য জমা দিতে বলেছে আদালত। সমস্ত অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে দেখা উচিত, তাই আবেদবকারী এবং সরকারি কৌঁসুলি, দুই পক্ষকেই যাবতীয় নথিপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে।
https://images.assettype.com/barandbench/2024-09-30/d5i550b2/S_Kamaraj_vs_The_State.pdf পড়ুন আদালতের নির্দেশ।
শুধু তাই নয়, সদগুরু ওরফে জগ্গি বাসুদেবের উদ্দেশ্য নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছে আদালত। বিচারপতিদের বক্তব্য, "আমার জানতে চাই, একজন ব্যক্তি, যিনি নিজের মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন, মেয়েকে জীবনে প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছেন, তিনি অন্যের মেয়েদের কেন মাথা কামিয়ে, সন্ন্যাসীর মতো জীবনযাপনে উৎসাহিত করছেন? সন্দেহ রয়েছে এখানে।"
অভিযোগকারী কামরাজের দুই কন্যাকেও আদালতে হাজির করানো হয়। তাঁরা যদিও জানান, স্বেচ্ছায় ওই সংস্থায় যোগ দিয়েছেন তাঁরা। কেউ জোর করেননি। আলাদা করে ওই দু'জনের সঙ্গে চেম্বারে কথা বলার সিদ্ধান্ত নেন বিচারপতিরা। এর পর আদালত জানায়, কিছু বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। ৪ অক্টোবর ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে।
উল্লেখ্য, সদগুরুর মেয়ে রাধে জগ্গি পেশায় ভারতনাট্টম শিল্পী। ২০১৪ সালে চেন্নাইয়ের ক্লাসিক্যাল সঙ্গীতের কণ্ঠশিল্পী সন্দীপ নারায়ণের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। তাঁদের বিয়েতে আমনন্ত্রিত ছিলেন পরিচালক শেখর কপূর, অভিনেত্রী জুহি চাওলা, পরিচালক-প্রযোজক এস এ চন্দ্রশেখর, তাঁর স্ত্রী শোভা চন্দ্রশেখর, কিরণ বেদি থেকে শিল্পী এবং রাজনীতিক জগতের VVIP-রা। ৩৪ বছর বয়সি রাধে জগ্গির মোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৩০ লক্ষ ডলার বলে জানা যায়।