প্রয়াগরাজ: মহাকুম্ভের উৎসবমুখর পরিবেশ বদলে গিয়েছে হাহাকারে। পদপিষ্ট হয়ে কমপক্ষে ১৫ জনের মৃত্যুর খবর মিলছে। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে ১০০-র কোটা। বুধবার মৌনী অমাবস্যায় ত্রিবেণী সঙ্গমে ‘অমৃত স্নান’ উপলক্ষে ৮ থেকে ১০ কোটি মানুষ মেলাপ্রাঙ্গনে উপস্থিত হবেন বলে আঁচ পাওয়া গিয়েছিল আগেই। তার পরও কেন পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনা ছিল না, সেই নিয়ে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারের দিকে আঙুল উঠছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে এবং অন্য বিরোধী দলের নেতারা এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।



বুধবার মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় খড়গে লেখেন, ‘মহাকুম্ভে তীর্ঘরাজ সঙ্গম ঘাটে পদপিষ্ট হয়ে অনেকের প্রাণ গিয়েছে। আহতও হয়েছেন অনেকে। এই খবর হৃদয়বিদারক। ক্ষতিগ্রস্ত পুণ্যার্থীদের পরিবার-পরিজনদের গভীর সমবেদনা জানাই। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি’। পাশাপাশি, মহাকুম্ভের ব্যবস্থাপনারও সমালোচনা করেছেন খড়গে। তাঁর বক্তব্য, ‘অর্ধেক, অসম্পূর্ণ ব্যবস্থাপনা, ভিআইপি-দের অগ্রাধিকার দেওয়া, পর্যাপ্ত ব্যাপস্থাপনার পরিবর্তে আত্মপ্রচারে জোর দেওয়াই এই দুর্ঘটনার নেপথ্য কারণ। হাজার হাজার কোটি টাকা খরচের পরও এমন ব্যবস্থাপনা যথেষ্ট নিন্দনীয়। এখনও শাহি স্নান বাকি। কেন্দ্র এবং রাজ্যের এবার অন্তত সচেতন হওয়া উচিত। এমন অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তার জন্য চেষ্টা করতে হবে। পুণ্যার্থীদের, থাকা, খাওয়া, চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে’। এবারের মহাকুম্ভের আয়োজন করতে প্রায় ৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা খরচ হয় বলে জানায় উত্তরপ্রদেশ সরকার। সেই নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন খড়গে।



উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব লেখেন, ‘মহাকুম্ভে যে সাধু-সন্ত এবং পুণ্যার্থীরা আসেন, তাঁদের আস্থা ফেরাতে হলে অবিলম্বে সেনার হাতে মনেলাপ্রাঙ্গনের দায়িত্ব সঁপে দেওয়া উচিত। বিশ্বমানের ব্যবস্থাপনা বলে প্রচার করা হয়েছিল বিস্তর। সকলের সামনে আসল সত্য চলে এল। যাঁরা মিথ্যে দাবি করছিলেন, মিথ্যে প্রচার করছিলেন, মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনার দায় নিতে হবে তাঁদের। পদত্যাগ করতে হবে’। 



কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী লেখেন, ‘প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণহানি এবং আহত হওয়ার খবর অত্যন্ত দুঃখজনক। শোকগ্রস্ত পরিবারগুলিকে গভীর সমবেদনা জানাই। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার জন্য চূড়ান্ত অব্যবস্থা যেমন দায়ী, তেমনই সাধারণ পুণ্যার্থীদের ছেড়ে ভিআইপি-দের প্রাধান্য দেওয়ার রীতিও দায়ী। এখনও মহাকুম্ভ চলবে, আরও মহাস্নান রয়েছে। ফের যাতে এমন কিছু না ঘটে, তার জন্য ব্যবস্থাপনায় সংশোধন ঘটাতে হবে রাজ্যের সরকারকে’।