প্রয়াগরাজ: মহাকুম্ভে মহাবিপর্যয়ের পর ঘুম ভাঙল উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারের। প্রয়াগরাজের কুম্ভমেলায় একাধিক পরিবর্তন ঘটাল তারা। যে ভিআইপি কালচার নিয়ে গোড়া থেকে প্রশ্ন উঠছিল, তাতে রাশ টানা হল। অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে আরও একাধিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হল। (Mahakumbh VVIP Passes Cancelled)
উত্তরপ্রদেশ সরকার যে সিদ্ধান্তগুলি নিয়েছে, তা হল-
- কুম্ভমেলা চত্বরে যাবতীয় গাড়ির প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হল। কোনও রকম যান নিয়ে ঢোকা যাবে না মেলাচত্বরে।
- সমস্ত ভিভিভিআইপি পাস বাতিল করল যোগী সরকার। ভিভিআইপি পাস দেখিয়ে আর গাড়ি নিয়ে ঢোকা যাবে না। কারও ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম হবে না বলে জানানো হল।
- ওয়ান ওয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু হল কুম্ভমেলা চত্বরে। পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এমন সিদ্ধান্ত।
- পড়শি জেলা থেকে প্রয়াগরাজে গাড়ির প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হল আপাতত। সীমানাতেই গাড়ি আটকে দেওয়া হচ্ছে। যানজট এড়াতেই সিদ্ধান্ত।
- আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রয়াগরাজ শহরে চার চাকার গাড়ি নিষিদ্ধ। এই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে বলা হয়েছে।
- সচিব পর্যায়ের পাঁচ উচ্চপদস্থ অফিসারকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বড় অনুষ্ঠান এবং ভিড় সামলানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁদের। মহাকুম্ভের কার্য পরিচালনা করবেন তাঁরা।
- ভিড় সামলাতে IAS অফিসার আশিস গোয়েল এবং ভানু গোস্বামীকে প্রয়াগরাজ পৌঁছতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০১৯ সালে তাঁরাই অর্ধকুম্ভের দায়িত্ব সামলেছিলেন।
কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে ৩০ জন পুণ্যার্থীদের মৃত্যু হয়েছে বলে যোগী সরকার জানিয়েছে। আহতের সংখ্যা দ্বিগুণ বলে দাবি করেছে তারা। নিহতদের পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণাও করেছেন যোগী। যদিও বেসরকারি মতে, হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি। কী কারণে এমন বিপর্যয় ঘটল, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। (Mahakumbh Stampede)
মহাকুম্ভের বিপর্যয় নিয়ে ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। এক আইনজীবী জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন।
ঘটনার পর কী পদক্ষেপ নিয়েছে যোগী সরকার? স্টেটাস রিপোর্ট তলব করুক সর্বোচ্চ আদালত, আর্জি মামলাকারীর। সমস্ত রাজ্যকে কুম্ভ মেলায় সহায়তা কেন্দ্র খুলতে বলা হোক, সুপ্রিম কোর্টে এই আবেদনও জানিয়েছেন তিনি।
গোটা ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ সরকারের ভূমিকায় প্রশ্ন উঠছে। প্রচারে কোনও খামতি না রাখা হলেও, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে হেলদোল ছিল না বলে উঠছে অভিযোগ। পাশাপাশি, ভিআইপি-দের সন্তুষ্ট করতে গিয়ে সাধারণ পুণ্যার্থীদের অবহেলা করছে বলেও দাবি সামনে এসেছে। যোগীর পদত্যাগের দাবি তুলেছেন বিরোধীরা।