নয়াদিল্লি: ফের অশান্তির আঁচ মণিপুরে। মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল ফের অশান্ত। পরিস্থিতি সামলাতে জারি করা হয়েছে কার্ফু। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের খবর মিলেছে। পরিস্থিতি সামলাতে নামানো হয়েছে সেনা।  


বেশ কিছুদিন আগেই হিংসার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মণিপুর (Manipur)। পরপর সংঘর্ষ, ঝামেলা, অগ্নিসংযোগে উত্তপ্ত হয়েছিল উত্তর পূর্বের এই রাজ্য। মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর বিরোধে আগুন জ্বলেছে মণিপুরে। সেনা নামিয়ে পরিস্থিতি সামলাতে হয়েছে। আপাত কয়েকদিন শান্ত থাকার পরে ফের আগুন জ্বলল মণিপুরে। সূত্রের খবর, ইম্ফলে নিউ চেকন এলাকায় দুই গোষ্ঠীর বিরোধে ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। স্থানীয় একটি বাজারে জায়গা নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত। উত্তেজনার ঘটনা সামনে আসতেই এলাকায় কার্ফু ঘোষণা করা হয়। নামে সেনা।


মাসখানেকেরও বেশি সময় ধরে উত্তপ্ত মণিপুর। তফসিলি জনজাতিভুক্ত হওয়ার দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছিল মেইতেই জনগোষ্ঠী। মেইতেইদের  তফসিলি জনজাতিভুক্ত হওয়ার দাবির বিরোধিতায় ৩ মে মিছিলের আয়োজন করেছিল কুকি জনগোষ্ঠী।- তখন থেকেই বিরোধের সূত্রপাত। ওই হিংসায় এখনও পর্যন্ত ৭০৯ জনের প্রাণ গিয়েছে। বহু টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। বহু বাসিন্দাকে নিরাপত্তার জন্য বাড়িঘর ছেড়ে সরকারের শিবিরে গিয়ে উঠতে হয়েছে। 


কী কারণে এমন ক্ষোভ:
মণিপুরের বাসিন্দাদের বড় অংশই মেইতেই জনগোষ্ঠীর। তাঁরা মূলত ইম্ফল ও লাগোয়া সমতল এলাকায় বাস করেন। পাহাড়ি এলাকায় থকেন কুকিরা। মেইতেইরা জনজাতি গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় তাঁরা পাহাড়ি এলাকায় জমি কিনতে পারেন না। কিন্তু কুকিরা সমতল এলাকায় জমি কিনতে পারেন। এবার মেইতেই জনগোষ্ঠী তফসিলি জনজাতিভুক্ত হয়ে গেলে তাঁরাও পাহাড়ি এলাকায় জমি কিনতে পারবেন, সেটাই কুকিদের অসন্তোষের কারণ। কুকিদের দাবি, এন বীরেন সিংহের সরকার তাঁদের ক্রমশ কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে। 


শুধু মেইতেইদের তফসিলি জনজাতিভুক্ত হওয়ার দাবির বিরোধিতা নয়। আরও একটি কারণে চড়েছে ক্ষোভের পারদ। মণিপুরের পাহাড়ি এলাকায় কুকি জনগোষ্ঠীদের বাস। সেই পাহাড়ি এলাকায় সংরক্ষিত অরণ্য থেকে কুকি জনগোষ্ঠীভুক্ত বাসিন্দাদের সরে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তার জন্য পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। আর সেটা নিয়েই চড়েছে ক্ষোভের পারদ। একাধিকবার বিক্ষোভও দেখানো হয়েছে।


পরিস্থিতি সামলাতে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার। নিরাপত্তা আটোসাঁটো করা হয়েছে। সেনা ও আধাসামরিক বাহিনী নামানো হয়েছে।  কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ হিংসায় জড়িতদের শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন। দুই গোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গেই দেখা করেছিলেন তিনি।


আরও পড়ুন: আপনিও স্বাক্ষরের সময় এমন ভুল করেন, সাবধান, জেনে নিন সঠিক উপায়?