নয়াদিল্লি: নয় নয় করে ৯০ পেরিয়ে গিয়েছিল বয়স। জনসমক্ষে সেভাবে আর দেখা যেত না। একবছর আগে হুইলচেয়ারে বসে সংসদে এসেছিলেন। আর জনসমক্ষে তাঁকে দেখার সম্ভাবনাও শেষ হয়ে গেল। চলে গেলেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। বৃহস্পতিবার দিল্লির AIIMS-এ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। আজই রাতে তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। (Manmohan Singh Death)


দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন মনমোহন। এদিন আচমকাই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে বলে জানা গিয়েছে। শ্বাসকষ্টের সমস্যা গুরুতর আকার ধারণ করে। তড়িঘড়ি AIIMS-এ আনা হয় তাঁকে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে, ICU-তে ভর্তি করা হয় মনমোহনকে। সেখানে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে ছিলেন তিনি। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। (Manmohan Singh Demise)


মনমোহনের প্রয়াণে বিবৃতি প্রকাশ করেছেন AIIMS কর্তৃপক্ষ। তাতে লেখা রয়েছে, 'বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার চিকিৎসা চলছিল ডঃ মনমোহন সিংহের। ২৬ ডিসেম্বর হঠাৎ জ্ঞান হারান তিনি।  বাড়িতেই তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা শুরু হয়। রাত ৮টা বেজে ৬ মিনিটে হাসপাতালে আনা হয় তাঁকে। কিন্তু সব চেষ্টা সত্ত্বেও ওঁকে ফেরোনা যায়নি। রাত ৯টা বেজে ৫১ মিনিটে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়'।



এদিন দিল্লির AIIMS-এ পৌঁছন মনমোহনের পরিবারের লোকজনও। পৌঁছন কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়ঙ্কা গাঁধী, মল্লিকার্জুন খড়গে, সনিয়া গাঁধীও। রাহুল গাঁধী বেলগাভিতে রয়েছেন। দিল্লি ফিরে আসছেন তিনি। মনমোহনের প্রয়াণে শোকের ছায়া রাজনৈতিক মহলে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকজ্ঞাপন করেন। এদিন AIIMS-এও পৌঁছন বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা।


দীর্ঘ সময় ধরে অসুস্থ ছিলেন মনমোহন। একাধিক বার বাইপাস সার্জারিও হয়েছে তাঁর। ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসেও অস্ত্রোপচার হয় তাঁর। গত বছর সংসদেক বিশেষ অধিবেশনে যখন গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস করাতে উদ্যত, বিরোধীরা তার মোকাবিলায় সচেষ্ট, সেই সময় হাজার বারণ সত্ত্বেও হুইল চেয়ারে বসে রাজ্যসভায় পৌঁছে যান মনমোহন। সেই অবস্থায় তাঁকে দেখে সেই সময়ই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন অনুরাগীরা। সকলকে নিরাশ করে চলে গেলেন মনমোহন। এ বছর এপ্রিল মাসে রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে অবসর নেন। দীর্ঘ ৩৩ বছরের সাংসদ কেরিয়ারে ইতি পড়ে।