ওয়াশিংটন: আমেরিকার মসনদে ফেরার আশায় মরিয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প। জো বাইডেন আদৌ তাঁর মোকাবিলা করতে পারবেন কি না, সেই নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে ডেমোক্র্যাটস শিবিরেই। সেই আবহেই, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মিশেল ওবামাকে শামিল করার দাবি আরও জোরাল হল। বাইডেনের পরিবর্তে ডেমোক্র্যাটসদের তরফে প্রাক্তন ফার্স্ট লেডি মিশেলকে প্রার্থী করার দাবি জানালেন ডেমোক্র্যাটস সদস্যরাই। (US President Elections 2024)
Rasmussen Reports Polls-এ নিজেদের মতামত জানিয়েছেন ডেমোক্র্যাটস শিবিরের সদস্যরা। সেখানে ৪৮ শতাংশ জানিয়েছেন, বাইডেনের উপর আস্থা নেই তাঁদের। নভেম্বরে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। রিপাবলিকান্স-এর তরফে যদি ট্রাম্পই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, সেক্ষেত্রে তাঁর বিরুদ্ধে মিশেলকে প্রার্থী করা যেতে পারে বলে মত ৪৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাটসের। যদিও ৩৮ শতাংশের সায় নেই তাতে। (Michelle Obama)
৮১ বছর বয়সি বাইডেনের জায়গায় কাকে আনা হতে পারে, সেই নিয়েও পৃথক ভোটাভুটি হয়, তাতে ২০ শতাংশের সমর্থন পেয়েছেন মিশেল। ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, প্রাক্তন বিদেশ সচিব হিলারি ক্লিন্টন, ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গেভিন নিউসম, মিশিগানের গবর্নর গ্রেচেন হুইটমারও ছিলেন প্রতিযোগিতায়। কিন্তু মিশেলের সমর্থনেই বেশি ভোট পড়েছে।
আরও পড়ুন: Ravi River Water Flow: জল পাবে না পাকিস্তান, ইরাবতীর উপর বিশালাকার বাঁধ নির্মাণ ভারতের
সেই নিরিখে কমলা ১৫ শতাংশ, হিলারি ১২ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। যাঁরা হিলারিকে ভোট দিয়েছেন, ফের একবার ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর লড়াই দেখতে চান বলে জানিয়েছেন। তবে মিশেলের পক্ষেই সমর্থন বেশি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের নাম লেখানোর বিষয়টি তাঁকে ভাবনা-চিন্তা করে দেখতে অনুরোধ জানানো হয়েছে ডেমোক্র্যাটস শিবিরের তরফে।
আমেরিকাক প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার স্ত্রী মিশেল। ২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ফার্স্ট লেডি হিসেবে হোয়াইট হাউসই তাঁর ঠিকানা হয়ে উঠেছিল। আমেরিকা তথা বিশ্ব রাজনীতি সম্পর্কে নিজের মতামত জানাতেও কুণ্ঠা বোধ করেন না তিনি। ব্যক্তি মিশেলের অনুরাগীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। যে কারণে এর আগেও, একাধিক বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অনুরোধ পেয়েছেন মিশেল।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি আমেরিকার, সেই নিয়ে সম্প্রতি উদ্বেগও প্রকাশ করেন মিশেল। তাঁকে বলতে শোনা যায়, "আগামী নির্বাচনে কী হতে পারে ভেবে এখন থেকেই আতঙ্কিত আমি। কারণ নেতা হিসেবে কাকে বেছে নিচ্ছি আমরা, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাকে বেছে নেব, কে আমাদের হয়ে কথা বলবেন, কার হাতে ক্ষমতা উঠবে, আমাদের জীবনের উপরও তার প্রভাব পড়বে। আমার মনে হয়, আজকাল মানুষ বিষয়টি হেলাফেলা করেন। গণতন্ত্রকে হাতের মোয়া ভাবলে চলবে না। কিন্তু আমার আশঙ্কা, সেই আচরণই প্রতিফলিত হচ্ছে, যা দেখে রাতে ঘুমাতে পারি না আমি।"
এ বছর নভেম্বর মাসে আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি যা, তাতে আবারও রিপাবলিকান্স শিবিরের প্রার্থী হিসেবে ট্রাম্প এবং ডেমোক্র্যাটস প্রার্থী হিসেবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে মুখোমুখি দেখা যেতে পারে। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে বাইডেনের উপর থেকো আস্থা হারাচ্ছেন ডেমোক্র্যাটস শিবিরের একাংশই। প্রথমত, বার্ধক্য, দ্বিতীয়ত বাইডেনের বর্তমান শারীরিক অবস্থা, দুই নিয়েই উদ্বেগ রয়েছে। প্রকাশ্য মঞ্চে ভাষণ দিতে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এমনকি স্ত্রীর নাম পর্যন্ত ভুলে যেতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। তাই ট্রাম্পের মোকাবিলা করতে বাইডেন উপযুক্ত নন বলে মনে করছেন অনেকেই। আর তাতেই ফের মিশেলকে নির্বাচনী ময়দানে দেখার দাবি উঠছে।