নয়াদিল্লি: একটানা ভারী বৃষ্টিতে বেহাল অবস্থা উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের। বানভাসি একাধিক এলাকা, জায়গায় জায়গায় নেমেছে ধস। হড়পা বানে ভেসে গিয়েছে বাড়িঘর, রাস্তা। রাস্তাঘাট সব বন্ধ। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন (Heavy Rainfall)। ক্ষয়ক্ষতির ইয়ত্তা তো নেই-ই, সেই সঙ্গে প্রাণহানিও অব্যাহত। হড়পা বানে ভেসে গিয়ে, ধসে চাপা পড়ে, সবমিলিয়ে গত কয়েক দিনে ১০০-র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। (Weather Updates)


একটানা বৃষ্টিতে এখনও পর্যন্ত হিমাচল প্রদেশের অবস্থাই সবচেয়ে উদ্বেগজনক। গত এক সপ্তাহে যত জন জন প্রাণ হারিয়েছেন, তার মধ্যে প্রায় ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে হিমাচলে। পড়শি রাজ্য উত্তরাখণ্ডে পাঁচ জনের মৃত্যুর ঘটন সামনে এসেছে। জলের তোড়ে হিমাচলে জাতীয় সড়ক থেকে বাড়িঘর, গাড়ি সব ভেসে গিয়েছে। ভেঙে পড়েছে সেতুও। মাটি আলগা হয়ে পাহাড়ের উপর থেকে ভারী পাথর ভেঙে পড়ার ঘটনাও সামনে এসেছে। 


হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুুখু মঙ্গলবারই হেলিকপ্টারে চেপে পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন। কাসোল, মণিকর্ণ, ক্ষীর গঙ্গা, পুলগা-সহ একাধিক জায়গা জলমগ্ন সেখানে। সাইঞ্জে ৪০ দোকান এবং ৩০টি বাড়ি জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কুলুতে ত্রাণ শিবিরেও গতকাল যান সুখু। সেখানে আশ্রিতদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সবমিলিয়ে হিমাচলে ক্ষয়ক্ষতির অঙ্ক ৩ থেকে ৪ হাজার কোটি বলে জানা গিয়েছে।


আরও পড়ুন: Yamuna Water Level: ভয়াল রূপ যমুনার, বিপদসীমা পেরিয়ে গেল জলস্তর, বন্যার আশঙ্কা দিল্লিতে, শুরু হল উদ্ধারকার্য


মৌসম ভবন জানিয়েছে, পশ্চিমি ঝঞ্জার উপদ্রবেই বন্যা পরিস্থিতি উপস্থিত হয়েছে উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। হিমাচলে আটকে পড়েছেন ৩০০-র বেশি পর্যটক। ভারী বৃষ্টির পাশাপাশি তুষারপাতও শুরু হয়েছে সেখানে। পঞ্জাব এবং হরিয়ানায় ১৫ জন মারা গিয়েছেন বলে খবর মিলেছে। উত্তরাখণ্ডে কমপক্ষে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। 


গত এক সপ্তাহ ধরেই হিমাচলের পরিস্থিতি ক্রমশ সঙ্কটের দিকে এগোয়। গত চারদিন লাগাতার ভারী বর্ষণের সাক্ষী থেকেছে জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানও। ইরাবতী, বিপাশা, শতদ্রু, চন্দ্রভাগার মতো একাধিক নদী ফুঁসছে। নগীদুলির জলস্তর বিপদসীমা পার করে গিয়েছে কোথাও, কোথাও আবার দু'-কুল ছাপিয়ে উপচে পড়েছে।  


এমন পরিস্থিতিতে হিমাচল এবং উত্তরাখণ্ডে লাল সতর্কতা জারি করেছে মৌসম ভবন। উত্তরাখণ্ডে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নাগরিকদের। এর আঁচ এসে পৌঁছেছে রাজধানী দিল্লিতেও। সেখানে রীতিমতো ফুঁসছে যমুনা। বিপদসীমা পার করে গিয়েছে যমুনার জলস্তর। নদীপাড় সংলগ্ন এলাকা থেকে ইতিমধ্যেই মানুষজনকে সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। আপনা থেকেই নীচু এলাকা ছেড়ে উড়ালপুলের উপর ঠাঁই নিয়েছেন বহু মানুষ।