কলকাতা: হিমালয়ে তো কত কিছুই এমন রয়েছে যার ব্যাখ্যা হয়না।  কৈলাসের মত রহস্যময় পর্বত সারা পৃথিবীতে আর একটিও নেই। কারণ এই পর্বতকে ঘিরে যুগ যুগ ধরে আবর্তিত হয়ে আসছে রহস্যের কুয়াশা। যেমন কৈলাস মানসসরোবরের পথে যেতে ওম পাহাড়। হিমালয়ের সারি সারি পর্বত চলে গিয়েছে। কত যে পর্বত তা গুণে শেষ করা দায়। ফলে সব পর্বতের কথা কেউ জানেনও না। কেউ খবরও রাখেন না। কিন্তু কৈলাস মানসসরোবরের পথে যাঁরা এগিয়ে যান, তাঁরা একটু পথ ঘুরে হাজির হন হিমালয়েরই একটি পর্বতের সামনে। হিন্দুদের কাছে পর্বত ঈশ্বরসম। কারণটা পর্বতের দিকে চাইলেই বোঝা যায়।


কালো পাথরের এই পর্বতের গায়ে লেগে থাকে বরফ। অন্য সব পাহাড়ের মতই। তবে এ পর্বতে বরফ জমাট বাঁধে একটু অন্যভাবে। যা দূর থেকে দেখলে ভেসে ওঠে একটি শব্দ। রহস্য গভীর করে তোলে কৈলাস পর্বতের গায়ে বরফ ও পাথরের মেলবন্ধনে তৈরি হওয়া পবিত্র 'স্বস্তিকা' এবং 'ওঁ' চিহ্ন। হিন্দুদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র শব্দ। ওম শব্দটি স্পষ্ট ফুটে ওঠে পাহাড়ের গায়ে। এমনভাবে বরফ জমাট বেঁধে থাকে যেন মনে হয় কেউ বিশাল পাহাড়ের গা জুড়ে সাদা রং দিয়ে ওম শব্দটা লিখে দিয়েছে। এভাবে বরফ কেউ সাজাননি। কিন্তু প্রকৃতি এই শিল্পের জন্মদাতা। যা পাহাড়ের গায়ে ফুটিয়ে তোলে পবিত্রতম শব্দ ওম। যা দেখার জন্য বহু মানুষ হাজির হন এ পর্বতের সামনে। চর্মচক্ষে দেখে যান হিমালয়ের এই রহস্যময় খেলা।


পাহাড়ের গায়ে লেখা ওম দেখে অনেকেই প্রণাম করেন। প্রণম্যই বটে। পাহাড়ের গায়ে প্রকৃতি সেখানে লিখে দেয় ওম। উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগড় জেলার অন্তর্গত হিমালয়ের সারিতেই মাথা তুলে বরফে লেখা ওম নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ১৮ হাজার ৩৪০ ফুটের ওম পর্বত।


আরও পড়ুন, সূর্যের রঙ কি হলুদ না কমলা? আসল উত্তর জানলে অবাক হতে হয়!


রাশিয়ার চক্ষু বিশেষজ্ঞ ড. আর্নেস্ট মুল্ডাশেভ, ১৯৯৯ সালে ইতিহাসবিদ, পদার্থবিদ ও ভূতত্ববিদের এক বিশাল দল নিয়ে গিয়েছিলেন কৈলাসে। দলটি মাসের পর মাস কাটিয়েছিল সেখানে। কথা বলেছিল অসংখ্য তীর্থযাত্রী, হিন্দু ও বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের সঙ্গে। কৈলাসে থাকাকালীন কিছু অস্বাভাবিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছিল দলটি। দেশে ফিরে ড. মুল্ডাশেভ জানিয়েছিলেন, রাতের অন্ধকারে কৈলাসের রূপ পাল্টে যাওয়ার কথা। হাড় হিম করা আওয়াজ ভেসে আসতে থাকে কৈলাস পর্বতের দিক থেকে। সেই আওয়াজটি অবিকল যেন 'ওম' বলছে। যেন পুরো পর্বত একই সাথে একই কথা বলছিল।

কৈলাশে গেলে এই ওম ধ্বনিটি অবিরাম শুনতে পাওয়া যায়। অনেকেই মনে করেছেন, একটি বিমান কাছাকাছি উড়ছে, কিন্তু মনোযোগ দিয়ে শুনে দেখেছেন এই ধ্বনিটি 'ডমরু' বা 'ওঁ' ধ্বনির মতো। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি বরফ গলে যাওয়ার শব্দ হতে পারে। এমনও হতে পারে যে, আলো এবং শব্দের মধ্যে এমন মিথস্ক্রিয়া আছে, যার কারণে এখান থেকে 'ওঁ' ধ্বনি শোনা যায়।