গ্যাংটক: ভারী বৃষ্টিতে তথৈবচ অবস্থা সিকিমের। তিস্তার জলস্তর বিপদসীমা পার করে গিয়েছে। রাস্তার একেবারে ধার ঘেঁষে বইছে জল। ধস নেমেছে জায়গায় জায়গায়। ফলে যান চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে চলছে ভারী বৃষ্টি। শনিবার সকাল ৮.৩০টা পর্যন্ত, গত ৯৬ ঘণ্টায় সেখানে ২৫৪.৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে খবর। এমন অবস্থায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষজনকে বাইরে বেরোতে নিষেধ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। (Sikkim Landslide)


উত্তর সিকিমের প্রবেশপথ হিসেবে চিহ্নিত রাংতাং সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে উত্তরের অংশের সঙ্গে গোটা রাজ্যের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে বলে খবর। বিকল্প রুট ধরে যাওয়ার ক্ষেত্রেও বাধা সৃষ্টি হয়েছে। কারণ গতবছর বন্যা পরিস্থিতিতে সাংকালাং সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তা এখনও পুরোপুরি ঠিক হয়নি।  (Sikkim Weather Updates)


গত বছর বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় সিকিমে। সেই ধাক্কা কাটতে না কাটতে ভারী বর্ষণে ফের বিপর্যস্ত রাজ্য। ভারী বৃষ্টির পাশাপাশি, উত্তর সিকিমের ছাঙ্গুতে তুষারপাতও ঘটেছে বলে খবর। সোমগো এবং জুলুকেও তুষারপাত হয়েছে বলে খবর। রংপো এবং সিংতামের মধ্যে একাধিক পয়েন্ট বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তিস্তা, সেলফি দারা, বিরিক দারা, কালীঝোরাতেও যান চলাচল বন্ধ।



ধস নামার ফলে ১০ নং জাতীয় সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। বেড়াতে গিয়ে সেখানে আটকে পড়েছেন বহু পর্যটক। সিকিমের সাংসদ ইন্দ্র হাং সুব্বা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সিকিম এবং পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার অবনতি নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি। ১০ নং জাতীয় সড়ক বার বার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়া নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। 


আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী দু'দিন সিকিমে ভারী বৃষ্টিপাত জারি থাকবে। জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। গত ২৪ ঘণ্টাতেই শুধু ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে সিকিমে। সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চার মুখপাত্র বিকাশ বাসনেত বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে অনুরোধ জানিয়েছেন। খুব প্রয়োজন ছাড়া বেরোতে নিষেধ করেছেন তিনি।


এর আগে, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে ভয়ঙ্কর বন্যা দেখা দেয় সিকিমে। তিস্তা বলয় এলাকায় প্রচুর সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রাণহানিও ঘটে। এবছর দুর্যোগ ঘিরেও অশনি সঙ্কেত দেখছেন স্থানীয়রা।