চন্ডীগড়: অবশেষে সরকারি হাসপাতালে আজ সকালে সন্তানের জন্ম দিল দশ বছরের এক মেয়ে, যার গর্ভপাতের আবেদন সুপ্রিম কোর্টে নাকচ হয়ে যায় সম্প্রতি। মেয়েটির চিকিত্সায় গঠিত কমিটির চেয়ারপার্সন ডঃ দশারি হরিশ জানিয়েছেন, সদ্যোজাত শিশুর ওজন ২.২ কেজি। বাচ্চাটিকে নিউ নাটাল আইসিইউয়ে ভর্তি করা হয়েছে। মেয়েটি সুস্থ আছে, তাকে একটি পৃথক ঘরে রাখা হবে।

সদ্যোজাত শিশুর ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে সামান্য বেশি বলে অভিমত হরিশের। তিনি বলেন, বাচ্চাটিও ক্রমশ সুস্থ হয়ে উঠবে বলে আমরা আশা করছি।

যদিও মেয়েটির গর্ভধারণে প্রবল ঝুঁকির ব্যাপার ছিল, তবে এই হাসপাতালে সি-সেকশন পদ্ধতি তেমন কোনও ঘটনা নয় বলে অভিমত জানান তিনি। হরিশ বলেন, সন্তান প্রসবের সময় তিনজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, একজন অ্যানাসথেসিস্ট, একজন নিওনাটোলজিস্ট, একজন পেডেট্রিসিয়ান ডাক্তারদের টিমে ছিলেন।

প্রসঙ্গত, অকস্মাত্ মা হওয়া মেয়েটির চিকিত্সার যাবতীয় ব্যয় বহন করছে চন্ডীগড় প্রশাসন।

মেয়েটি বুঝতেই পারেনি যে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে সন্তানের জন্ম দিতে হবে বলে। তাকে বাবা-মা বোঝান, তার পাকস্থলীতে পাথর জমেছে, অপারেশন করে বাদ দিতে হবে।

ইতিমধ্যেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে মেয়েটির বাবা আবেদন করেছেন, তারা যাতে মেয়ের ভূমিষ্ঠ হওয়া বাচ্চাটিকে দত্তক হিসাবে কাউকে দিয়ে দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেয়।

মেয়েটি বেশ কয়েক মাস ধরে নিজের কাকার ধর্ষণের জেরে গর্ভবতী হয়ে পড়ে। গত মাসে পেটে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হওয়ায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দেখা যায়, ৩০ সপ্তাহের ওপর সে গর্ভবতী।
গত ১৮ জুলাই মেয়েটির গর্ভপাতের আর্জি খারিজ করে চন্ডীগড়ের জেলা আদালত।

২৮ জুলাই গর্ভপাতের আর্জি নাকচ করে দেয় সুপ্রিম কোর্টও। গর্ভাবস্থার ৩২-তম সপ্তাহে গর্ভ নষ্ট করে ফেলা মেয়েটি ও গর্ভস্থ ভ্রুণ, কারও পক্ষেই ভাল নয় বলে তাকে পরীক্ষা করে রিপোর্টে জানায় মেডিকেল বোর্ড। গর্ভপাতে সম্মতি দেওয়া হলে এত কম বয়সে মা হওয়া মেয়েটির ওপর কী ফল হতে পারে, তা আলোচনা করে তারা। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে প্রধান বিচারপতি জে এস খেহর ও বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়কে নিয়ে গঠিত শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ।

সলিসিটর জেনারেল রঞ্জিত কুমারকে বেঞ্চ প্রস্তাব দেয়, আগেভাগে গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে তাদের কাছে অসংখ্য আবেদন আসছে আজকাল, তাই সব রাজ্যেই এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য স্থায়ী মেডিকেল বোর্ড গঠন করা যায় কিনা, সরকার বিবেচনা করে দেখুক।