কলকাতা: মারণ রোগ ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই। তবুও পরীক্ষায় ভালো ফল করার অদম্য জেদ। হাসপাতালেই নিয়ে চলে এসেছিল বই-খাতা নিয়ে। রাঘব চান্ডকের আইসিএসই পরীক্ষার ফল সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। ৯৫.৮ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাশ করেছে সে।
গত বছরের এপ্রিলে অ্যাকুউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকোমিয়া ধরা পড়ে রাঘবের। মাত্র দু মাস ক্লাস করতে পেরেছে হেরিটেজ স্কুলের এই ছাত্র। কিন্তু তাতে কী! প্রবল ইচ্ছেশক্তির কাছে সব প্রতিকূলতা ম্লান হয়ে গিয়েছে। সাধনাই জয়ী হয়েছে শেষপর্যন্ত।
রাঘব বলেছে, ক্লাসে যে সব নোট দেওয়া হত, সেগুলি আমাকে এনে দিত আমার এক ভাই।
ছেলের সাফল্যে গর্বিত রাঘবের বাবা মনোজ চান্ডক। তিনি বলেছেন, প্রায় দেড় মাস ওকে একটানা হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল। এরপর থেকে প্রতিমাসে সাতদিন ওকে কেমোথেরাপির জন্য হাসপাতালে যেতে হত। ও শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। কিন্তু লড়াইয়ের শক্তি এতটুকু কমেনি।
স্কুলও রাঘবের পাশে দাঁড়িয়েছিল। সমস্ত ধরনের সাহায্য দিয়েছে।এমনকি, শিক্ষকদেরও রাঘবকে সাহায্য করতে বলা হয়েছিল। টাটা মেডিক্যাল সেন্টারে কেমোথেরাপির সময় রাঘবকে ক্লাস নোট দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়।
রাঘবের ক্যানসার ধরা পড়ায় পরিবারের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল। মনোজ চান্ডক বলেছেন,  ভেবেছিলাম যে হয়ত  ও পরীক্ষায় বসতে পারবে না। আমরা স্কুলে সব কথা জানাই। স্কুল কর্তৃপক্ষ বলে, আপনারা ওর শারীরিক দিকটি খেয়াল রাখুন, আমরা ওর পড়াশোনার দিকটা দেখছি। স্কুলে ক্লাসরুমে ওর জন্য আলাদা একটা বেঞ্চের বন্দোবস্ত করা হয়।
রাঘব বলেছে, বাবা-মা, শিক্ষক, বন্ধু, ভাই ও পরিবারের চিকিত্সক-তাকে সাফল্য পেতে সাহায্য করেছেন। সকলের সাহায্য না পেলে তার পক্ষে সাফল্য পাওয়া সম্ভব হত না।স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে আইআইটি-তে পড়তে চায় রাঘব।