জম্মু: সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে ভারতে জঙ্গি ঢোকানোর চেষ্টা চালিয়েই যাচ্ছে পাকিস্তান।  রবিবারও পাক সেনার গুলিতে দুই ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। গুলি ও মর্টারের ঘায়ে দুই যুবতী সহ তিনজন নিরীহ ভারতীয় নাগরিক, ২ সেনা ও এক বিএসএফ জওয়ান আহত হয়েছেন।
শনিবার রাত থেকেই পুঞ্চ এবং কৃষ্ণঘাঁটি সেক্টর লক্ষ্য করে বিনা প্ররোচনায় গুলিবর্ষণ শুরু করে পাক সেনা। একইসঙ্গে চলে মর্টার ও রকেট হানাও।
কৃষ্ণঘাঁটিতে দুটি জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঘটাতে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গ করে পাক সেনা। সেখানে এক সেনা জওয়ান শহিদ হন। অন্যদিকে, পুঞ্চে চারটি জায়গায় ভারতীয় সেনা ছাউনি লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ শুরু করে পাক সেনা। সেখানেও এক জওয়ান শহিদ হন আহত হন পাঁচজন।
আদতে এদিনের গুলিবর্ষণ ছিল পাকিস্তানের ‘কভার ফায়ারিং’। যাতে পাক জঙ্গিরা নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়তে পারে। কিন্তু পাকিস্তানের এই চাল বুঝে সজাগ ভারতীয় জওয়ানরাও পাল্টা গুলিবর্ষণ শুরু করে।
ভারতীয় সেনার গুলির মুখে জঙ্গিরা নিয়ন্ত্রণরেখা পেরোতে পারেনি। পাক সেনার কয়েকটি ছাউনিও ধ্বংস হয়ে যায়। তবে জঙ্গি অনুপ্রবেশ আটকে দেওয়া গেলেও পাক সেনার গুলিতে দুই ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। কৃষ্ণঘাঁটি সেক্টরে মৃত্যু হয়েছে ২২ সিখ রেজিমেন্টের ২৩ বছর বয়সী সেপাই গুরসেবক সিংহর। আরেক ভারতীয় জওয়ান শহিদ হয়েছেন পুঞ্চ সেক্টরে। মহারাষ্ট্রের কোলাপুরের বাসিন্দা ওই জওয়ানের নাম নায়েক তুকপারে রাজেন্দ্র নারায়ণ।
জঙ্গি অনুপ্রবেশের ছক ব্যর্থ হওয়ার আক্রোশে রবিবার সকাল থেকে নিয়ন্ত্রণরেখা লাগোয়া গ্রাম লক্ষ্য করে মর্টার ছুড়তে শুরু করে পাকিস্তান। পাক সেনার ছোড়া মর্টারে গুরুতর আহত ২৮ বছরের সালিমা আখতার।
মর্টারের ঘায়ে পুঞ্চে আরও দুই নিরীহ ভারতীয় মহিলা নাগরিক আহত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে একজন বিশেষ পুলিশ অফিসার। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে, পুঞ্চে আহতের তালিকায় রয়েছেন নিতি কুমার নামে এক বিএসএফ জওয়ানও। তাঁকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পাকিস্তানের লাগাতার হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। নাম না করে পাকিস্তানের উদ্দেশে তিনি বলেন, হিম্মত থাকলে চোখে চোখ রেখে লড়াই করুন। জয়ী হব আমরাই।
কিন্তু, ২৯ সেপ্টেম্বর পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর থেকে পাকিস্তান ১০১ বার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করেছে।
সেনা ও সাধারণ মানুষ মিলিয়ে প্রাণ গিয়েছে মোট ২১ জনের। এর মধ্যে গত দুই সপ্তাহে নিয়ন্ত্রণ রেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্তে গুলি চালনার ঘটনায় ৮ জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। গত সপ্তাহে পাকিস্তানের গুলিতে আট নিরীহ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।