নয়াদিল্লি: প্রতি বছর দেশে ২৫ লক্ষ গাড়ি বিক্রি হয়। এরমধ্যে ৩৫ হাজার বিলাসবহুল গাড়ি। অথচ বছরে ১০ লক্ষ টাকার বেশি আয় আছে বলে ঘোষণা করেছেন, এমন করদাতার সংখ্যা মাত্র ২৪.৪ লক্ষ। বছরে ৫০ লক্ষের বেশি আয়ের ঘোষণা করেছেন ১.৪৭ লক্ষ। এক পদস্থ সরকারি আধিকারিক এ কথা জানিয়েছেন।


১২৫ কোটি জনসংখ্যার দেশে ২০১৪-১৫ তে আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন মাত্র ৩.৬৫ কোটি ব্যাক্তি। ওই সরকারি আধিকারিক বলেছেন, দেশের বেশিরভাগই মানুষই করের আওতার বাইরে।

২০১৪-১৫ অ্যাসেসমেন্ট বর্ষে যে ৩.৬৫ কোটি জন আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে  মাত্র সাড়ে পাঁচ লক্ষ জন পাঁচ লক্ষ টাকার বেশি কর দিয়েছেন। তাঁদের জমা দেওয়া করের পরিমাণ মোট করের ৫৭ শতাংশ। এর অর্থ, যাঁরা আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন তাঁদের ১.৫ শতাংশর কাছ থেকে মোট আয়করের ৫৭ শতাংশ এসেছে।

তিনি বলেছেন, গাড়ি কেনার সঙ্গে আয়কর রিটার্নের বিষয়টি তুলনা করে দেখলে আশ্চর্য হতে হয়। গত পাঁচ বছরের হিসেব দেখলে দেখা যাবে যে, প্রতি বছর গড়ে ২৫ লক্ষ করে গাড়ি বিক্রি হয়েছে। গত তিন বছরে যথাক্রমে ২৫.৩ লক্ষ, ২৬ লক্ষ এবং ২৭ লক্ষ গাড়ি বিক্রি হয়েছে।

এই পরিসংখ্যান দেখিয়ে ওই আধিকারিক বলেছেন, এর থেকেই স্পষ্ট যে, এমন অনেক মানুষ রয়েছেন, যাঁদের গাড়ি কেনার ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু তাঁরা করের আওতায় বাইরেই রয়ে গিয়েছেন।

আয়কর তথ্য থেকে জানা গিয়েছে যে, বছরে ১ কোটি টাকার বেশি আয় রয়েছে বলে ঘোষণা করেছেন মাত্র ৪৮,৪১৭ জন। কিন্তু প্রতি বছর ৩৫ হাজার বিলাসবহুল গাড়ি বিক্রি হয়। অথচ, এক একটা গাড়ির মেয়াদ সাত বছর এবং পাঁচ বছরের আগে সাধারণ মানুষ ফের গাড়ি কেনেন না। এর থেকেই ধরে নেওয়া যায়, প্রতি বছরই এই ক্ষেত্রে বাড়ছে নতুন ক্রেতার সংখ্যা।

ব্যক্তিগত আয়কর রিটার্নের তথ্য অনুযায়ী, এমন ৫.৩২ লক্ষ মানুষ আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন যাঁদের বছরে আয় ২ লক্ষ টাকার কম। ফলে তাঁরা করের আওতায় পড়েন না।

ওই সরকারি আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, ২০১৪-১৫ অ্যাসেসমেন্ট বর্ষের তথ্য অনুযায়ী এমন ১.৬১ কোটি ব্যক্তি রয়েছেন যাঁদের আয়ের উতসে কর কাটা (টিডিএস) হয়। কিন্তু তাঁরা আয়কর রিটার্ন ফাইল করেন নি।

ভারতে আয়কর থেকে মোট রাজস্বের পরিমাণ ২০১৬-তে  জিডিপি-র ১৬.৭ শতাংশ।এক্ষেত্রে এই জাপানে ৩০.৩ শতাংশ এবং আমেরিকায় ২৫.৪ শতাংশ।

ওই আধিকারিক বলেছেন, এই হিসেব থেকেই স্পষ্ট এদেশে এমন অনেক মানুষই রয়েছেন, যাঁরা করের আওতায় পড়েন। কিন্তু কর জমা দেন না। এই করফাঁকি রোখার চেষ্টা করছে সরকার। গত ৮ নভেম্বরের নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত এই লক্ষ্যেই একটি পদক্ষেপ। তাঁর দাবি, এর মাধ্যমে বাতিল নোটে যে হিসাববহির্ভূত অর্থ ব্যাঙ্কে জমা পড়বে তা করের আওতায় নিয়ে আসা যাবে।