মুজফফরনগর: ২৫ বছর আগে তোলাবাজির প্রতিবাদ করার জেরে খুন হয়েছিলেন রশিদ আহমেদ নামে উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগরের এক ব্যবসায়ী। চার বছরের ছোট্ট মেয়েকে তিনি বলতেন, বড় হয়ে বিচারক হতে হবে। তাঁর সেই বাসনা পূরণ করেছেন মেয়ে অঞ্জুম সইফি। উত্তরপ্রদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সিভিল জাজ জুনিয়র ডিভিশন পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছেন অঞ্জুম। পরীক্ষার ফল দেখার পর তিনি আবেগ বশে রাখতে পারেননি। তাঁর একটাই আফশোস, বাবা এই সাফল্য দেখতে পেলেন না।

মুজফফরনগরের একটি বাজারে হার্ডঅ্যয়ারের দোকান ছিল রশিদের। তিনি তোলাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। তোলাবাজদের বিরুদ্ধে পুলিশের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে অন্যান্য ব্যবসায়ীদের নিয়ে প্রতিবাদ মিছিলও করেন রশিদ। কিন্তু এরপরেও তোলাবাজি চলতে থাকে। ফের প্রতিবাদ করেন রশিদ। এর জেরেই ১৯৯২ সালে প্রকাশ্য দিবালোকে তাঁকে গুলি করে খুন করে তোলাবাজরা।

অঞ্জুম বলেছেন, ‘বাবার কথা খুব কমই মনে আছে। তিনি আমাকে বলতেন, বিচারক হতে হবে। আমার বাবা ন্যায়ের পক্ষে লড়াই করছিলেন। কিন্তু সমাজের প্রচলিত ব্যবস্থায় বদল আনতে পারেননি। তাঁর স্বপ্ন পূরণ করাই আমার ইচ্ছা ছিল। এখন ঈশ্বর আমাকে সমাজে ইতিবাচক বদল আনার সুযোগ দিয়েছেন। আমি নিজস্ব ক্ষমতার মধ্যে থেকে বদল আনার চেষ্টা করব। বাবার বলিদান বৃথা যাবে না।’

অঞ্জুমের মা হামিদা বেগম বলেছেন, ‘আমার সন্তানদের জীবনের ঝুঁকি যাতে না থাকে এবং তারা পড়াশোনায় মন দিতে পারে, সেটা নিশ্চিত করার জন্য আমরা খুনের মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলাম। আজ আমি সফল মা। আমার স্বামীর নীতি ও আদর্শ অনুযায়ী সন্তানদের বড় করেছি। এর সুফল তারা পেয়েছে।’

অঞ্জুমের দাদা দিলশাদ আহমেদ বাবার ইচ্ছাপূরণ করার জন্য বিয়ে করেননি। অনেক কষ্ট করে বোনকে বিচারক করতে পেরেছেন তিনি। কঠিন লড়াইয়ে জয় পেয়ে তৃপ্ত দিলশাদ।