প্রাক্তন টেলিকম মন্ত্রী এ.রাজার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি মোটা টাকার বিনিময় মোবাইল ফোন সংস্থাকে এয়ারওয়েভ এবং লাইসেন্স পাইয়ে দিয়েছিলেন, যার জেরে দেশের প্রায় ১.৭৬ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছিল। দেশের শীর্ষ আদালত এ.রাজা অনুমোদিত সমস্ত লাইসেন্স বাতিল করে দেয়। এরপর আদালতে ২০১১ সালে এই মামলার শুনানি শুরু হয়। এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন ডিএমকে প্রধান এ.করুণানিধির মেয়ে এম.কানিমোঝিও।
একনজরে দেখে নেব এই টুজি কেলেঙ্কারি কি ছিল?
- ২০১০ সালে প্রথম সামনে আসে এই টুজি কেলেঙ্কারি। প্রসঙ্গত, ২০০৭-০৮ সালে নামমাত্র অর্থের বিনিময় দেশের টেলিকম অপারেটরদের সেকেন্ড জেনারেশন বা টুজি লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। সেসময় কোনও রকমের সঠিক নিলাম প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি বলেও অভিযোগ করা হয়। এই পুরো বিষয়টির সঙ্গে নাম জড়িয়ে যায় ডিএমকে-র এ.রাজার। যদিও তিনি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি আরও জানান, এই লাইসেন্স বণ্টনের পুরো প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত ছিলেন তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। সেই সময় তথ্য দেওয়া হয়েছিল টেলিকম মন্ত্রক, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অন্যান্য মন্ত্রক এবং সলিসিটর জেনারলের থেকে। তার ভিত্তিতেই বণ্টন করা হয়।
- তবে অডিট রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরই পদত্যাগ করেন এ.রাজা। ২০১১ সালে তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে জালিয়াতি, প্রতারণা এবং চক্রান্তে লিপ্ত থাকা সহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়। চার্জশিটে বলা হয়, তিনি ভুল তথ্য দিয়ে সেসময় মনমোহন সিংহকে বিভ্রান্তও করেছিলেন।
- প্রায় এক বছর কারাবাস কাটিয়ে জামিনে মুক্তি পান রাজা।
- এই ঘটনায় রাজা ছাড়াও আরও বেশি কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, টেলিকম সংস্থার বেশি কিছু উচ্চপদস্থ আধিকারিকের নাম জড়িয়ে যায়। নাম জড়িয়ে যায় অনিল অম্বানির সংস্থারও।
- সিবিআই দাবি করে, একটি টেলিকম সংস্থা প্রায় দুশো কোটি টাকা ঘুষ দিয়েছিল এ.রাজাকে। টাকাটি জমা পড়েছিল চেন্নাইয়ের এক টেলিভিশিন সংস্থার অ্যাকাউন্টে, যার অর্ধেক মালিকানা ছিল এ.কানিমোঝির হাতে। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্থ অভিযোগ অস্বাকীর করেন কানিমোঝি।
- টুজি রায় ঘোষণার দিন ছিল গত ৭ নভেম্বর। কিন্তু বিচারক বলেন, তাঁর সিদ্ধান্তে পৌছতে আরও বেশ কিছুটা সময় প্রয়োজন। ওই বিচারকই আবার দয়ানিধির বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন।
- এদিকে, গত ৫ নভেম্বর মোদী তামিলনাড়ু গিয়ে ডিএমকে প্রধান এম.করুণানিধির সঙ্গে দেখা করেন। তাতে জল্পনা শুরু হয়ে যায়, তাহলে কি তামিলনাড়ুতে নিজেদের ক্ষমতা বাড়াতে ডিএমকের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে বিজেপি?
- প্রসঙ্গত, ইউপিএ-র নেতৃত্বকালে টুজি কেলেঙ্কারিই ছিল দেশের সর্ববৃহত্ কেলেঙ্কারি। সেসময় বিরোধীদের হাতে সরকারের বিরুদ্ধে বড় অস্ত্র ছিল এই টুজি কেলেঙ্কারি।