পটনা, গুয়াহাটি ও নয়াদিল্লি: বিহার ও অসমে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি। আরও ৩৬ জনের মারা যাওয়ার খবর মিলেছে। এই দুই রাজ্যে ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়েছে। সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে রেল ও সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থা। বহু মানুষকে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে পরীক্ষা।
গতকাল পর্যন্ত নেপাল ও রাজ্যের উত্তরভাগে প্রবল বর্ষায় মৃত্যু হয়েছিল ৭২ জনের। এদিন বিহারে আরও ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে রাজ্যে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯৮। ১৫টি জেলায় প্রায় ৯৩ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে বিহার প্রশাসন। বন্যা-কবলিত এলাকায় হেলিকপ্টার থেকে খাবারের প্যাকেট ফেলা হয়। পাশাপাশি, পঞ্চায়েতের মাধ্যমেও খাবার বণ্টন করা হয়। বিহার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ১২৪টি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে একাধিক জাতীয় সড়ক রয়েছে।
এখনও জলমগ্ন বিহারের বিস্তীর্ণ এলাকা। মোতিহারিতে গ্রামের মধ্যে নদীর জল ঢুকে পড়ায় ভেসে গিয়েছে বহু বাড়ি। ঘাঘরা নদীর জলস্তর বিপদসীমার ১ মিটার উপর দিয়ে বইছে। এলাকা জলবন্দি হওয়ায় বহু মানুষ বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন। উদ্ধার কাছে নামানো হয়েছে নৌকা। জলবন্দি এলাকায় উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের দল। এখনও ট্রেন এবং সড়ক যোগাযোগ বিপর্যস্ত। বহু জায়গায় ভেলা তৈরি করে চলছে যাতায়াত। প্রশাসনের তরফে খোলা হয়েছে ত্রাণ শিবির।

এদিকে, বিহারের আরারিয়ায় প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে বন্যার তোড়ে ভেসে গেলেন মা ও ২ শিশু-সহ একই পরিবারের ৩ জন। একজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। দুর্ঘটনার মুহূর্তের ছবি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল। ১৩ অগাস্ট, আত্মীয়ের বাড়ি থেকে আরারিয়ায় ফিরছিল একটি পরিবার। এলাকায় বন্যার জল ঢোকার খবর পেয়ে প্রাণ বাঁচাতে জাতীয় সড়ক ধরে ছুটছিল পরিবারের চার সদস্য। কিন্ত জলের তোড়ে ভেসে যান শিশু-সহ এক মহিলা ও তাঁর বোনের সন্তান।
অন্যদিকেস অসমে বন্যা পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ। রাজ্যে এদিন বন্যায় মৃত্যু হয়েছে আরও ১০ জনের। এখনও পর্যন্ত চলতি বন্যায় মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৪৯ জনের। চলতি বছর অসমে বন্যায় মৃত্যু হয়েছে ১৩৩ জনের। প্রশাসন জানিয়েছে, ২১টি জেলায় ৬০০-র ওপর ত্রাণ শিবির চালু করা হয়েছে। ২৪ জেলায় প্রায় ৩২ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
উত্তরপ্রদেশেও বন্যায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বলরামপুর ও বারাইচ গত তিনদিন ধরে জলের তলায়।