নয়াদিল্লি: দু’বছর আগের এমনই এক জুনে ইরাকে আইএসআইএসের হাতে অপহৃত হয়েছিলেন তাঁরা। পরিবারের লোকজন ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক, ইরাকি প্রশাসনের কাছে বারবার দরবার করেও তাঁদের খোঁজ পাননি কোনও। অকূল পাথারে পড়া পরিবারগুলি ভেবেই নিয়েছিল, ইরাকে কর্মরত অবস্থায় অপহৃত হওয়া ওই ৩৯জন ভারতীয়ও আইএসের নির্মমতার শিকার। কিন্তু তাঁদের জন্য ক্ষীণ আশার আলো নিয়ে এসেছে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের মন্তব্য। সুষমা জানিয়েছেন, ওই ভারতীয়রা আইএসের হাতে নিহত হয়েছেন, এমন কোনও প্রমাণ দিল্লির হাতে নেই। তাঁদের ফিরিয়ে আনার জন্য সবরকম চেষ্টা চলছে। আইএসের হাত থেকে পালিয়ে আসা হরজিৎ মাসিহ ছাড়া কেউ বলেননি, ওই ভারতীয়দের খুন করা হয়েছে। নিখোঁজ ৩৯জনের সঙ্গে হরজিৎ মাসিহ-ও আইএসের হাতে বন্দি হন। কিন্তু কোনওরকমে পালাতে পারেন তিনি। পরে হরজিৎ দাবি করেন, বন্দি ভারতীয়দের খুন করেছে আইএস। কিন্তু সেই দাবি মানতে নারাজ বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছেন, উপসাগরীয় দেশগুলি থেকে পাওয়া খবর, ওই ভারতীয়রা এখনও বেঁচে।
সুষমার কথায়, তিনি কোনও মিথ্যে আশ্বাস দিচ্ছেন না। যদি নিশ্চিত হতেন, ওই বন্দিরা খুন হয়েছেন, তবে তাঁদের পরিবারের কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতেন তিনি। ইরাকের মোসুলে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে সেই খুনের দায়ও তাঁর ওপর বর্তাত না। কিন্তু তিনি যখন পরিষ্কার বলছেন, তাঁরা বেঁচে আছেন, তখন তাঁর ওপর তাঁদের খুঁজে বার করার বিরাট দায় রয়েছে। কোনও ভারতীয় নাগরিককে কখনও তিনি পরিত্যাগ করেননি, ইরাকে অপহৃত ভারতীয়দের উদ্ধারের দায়িত্ব তিনি নিজে ঘাড়ে নিয়েছেন, অতএব পিছিয়ে আসার প্রশ্ন নেই।
ঢাকায় যেভাবে রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে, সে ব্যাপারে উদ্বেগ গোপন রাখেননি সুষমা। পাশাপাশি, সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে নিয়মিতভাবে খুন হয়ে যাওয়া হিন্দু ও অন্যান্য অমুসলিম নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, অপরাধীদের ধরার জন্য সবরকম চেষ্টা করছে শেখ হাসিনা সরকার। ৩০০০-এর বেশি সন্দেহভাজন ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সংখ্যালঘু নাগরিকদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে নীতি নির্ধারণ করছে কেন্দ্র।
পাশাপাশি আফগানিস্তানে অপহৃত কলকাতার মেয়ে জুডিথ ডি সুজার মুক্তির ব্যাপারেও আশাবাদী সুষমা। তাঁর আশ্বাস, জুডিথকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে, যেভাবে কথা এগোচ্ছে, আশা করা যায়, শিগগিরই সমস্যা মিটবে।