নয়াদিল্লি: এবারের বাজেট নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। তিনি ট্যুইট করে বলেছেন, ‘ক্ষমতায় আসার চার বছর পরেও কৃষকদের ন্যায্যমূল্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে, অনেক পরিকল্পনার কথা বলা হচ্ছে কিন্তু বাজেটে বরাদ্দ নেই। আমাদের যুবকদের কর্মসংস্থান নেই। সৌভাগ্যবশত আর এক বছর বাকি।’



এর আগে রাহুল বাজেটের বিষয়ে সাংবাদিকদের কোনও প্রশ্নের জবাব দেননি। তবে ট্যুইট করে সরকারকে আক্রমণ করলেন কংগ্রেস সভাপতি।

প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমও বাজেটের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘১০ কোটি গরিব পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিমার আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি বড় জুমলা। বাজেট সাহসী ও ভিত্তিগত হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু বাজেটে উদ্দেশ্য পূরণ হয়নি। সরকার স্বীকার করে নিয়েছে, তারা অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির ক্ষেত্রে দিশা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। বাজেট প্রস্তাব অত্যন্ত হতাশাজনক।’

কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বাজেট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে কটাক্ষ করেছেন। অপর এক কংগ্রেস মুখপাত্র অখিলেশ সিংহ বলেছেন, এই বাজেটে তাঁরা হতাশ। প্রবীণ কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেছেন, এই বাজেট প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি।

তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন এই বাজেটকে সুপারফ্লপ বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর দাবি, ‘এই বাজেট সুপারফ্লপ। এটা ধাপ্পাবাজি ছাড়া আর কিছু নয়। এই সরকারের সময় শেষ হয়ে গিয়েছে। এই বাজেট হল মৃত্যুকালীন জবান।’

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টি প্রধান অরবিন্দ কেজরীবাল ট্যুইট করে বলেছেন, ‘আমি আশা করেছিলাম দেশের রাজধানীর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো বিষয়ক প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা করবে কেন্দ্র। কিন্তু দিল্লির প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ চালিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্র। এটা দেখে আমি হতাশ।’

দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ শিশোদিয়াও বাজেটের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘এই বাজেটে অত্যন্ত হতাশ হয়েছি। ২০০১-০২ থেকে এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় করে দিল্লির প্রাপ্য বাড়ানো হয়নি। এবারও দিল্লির জন্য মাত্র ৩২৫ কোটি টাকা করই রাখা হয়েছে। অন্য কোনও রাজ্যের সঙ্গে এই ধরনের আচরণ করা হয় না। দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রের আওতায়। তা সত্ত্বেও মহিলাদের নিরাপত্তা এবং অপরাধ দমন করার জন্য কোনও পরিকল্পনার কথা জানানো হয়নি। দিল্লি দেশের অপরাধের রাজধানী হয়ে গিয়েছে।’

শিবসেনা সাংসদ অরবিন্দ সাবন্ত বলেছেন, ‘নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই এই বাজেট পেশ করা হয়েছে। তাই শিল্প থেকে কৃষি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় নজর সরে গিয়েছে।আমি ব্যক্তিগতভাবে উন্নত মানের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের কথা বলে আসছি। সরকার এখন সেটা বুঝতে পেরেছে।’

শিবসেনা মুখপাত্র মণীষা কায়ান্ডে বলেছেন, ‘এই বাজেট দেখে মনে হচ্ছে নির্বাচনের আগে সবাইকে তুষ্ট করতে চাইছে সরকার। নোট বাতিল ও জিএসটি-র পর ধাক্কা খেয়েছে সরকার। গুজরাতের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি কোনওরকমে জেতার পর কেন্দ্র মরিয়া হয়ে গিয়েছে। মুদ্রাস্ফীতির হার কেন কমছে, তেলের দাম সর্বকালীন রেকর্ড দর ছোঁয়ার কারণ কী? তার জবাব দিতে হবে কেন্দ্রকে। কোটি কোটি মানুষ ব্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু ব্যাঙ্কের পরিষেবার খরচ বেড়েই চলেছে। সাধারণ মানুষের সুরাহা হচ্ছে কোথায়? মানুষ কোথায় টাকা রাখবেন?’

এনসিপি মুখপাত্র নবাব মালিক বাজেটের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘এই বাজেটে সাধারণ মানুষের পকেটে টান পড়বে। নরেন্দ্র মোদী সরকার স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার প্রাথমিক দায়িত্ব এড়িয়ে গিয়ে বিমা সংস্থাগুলির হাতে স্বাস্থ্যক্ষেত্র তুলে দিচ্ছে। এর আগে যে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ঘোষণা করা হয়েছিল, সেটা পাননি কৃষকরা। তাই কৃষকদের আয় বাড়ানোর কথা বলা গিমিক ছাড়া কিছুই নয়। বেসরকারি সংস্থাগুলির কাছে সরকারি সম্পদ বিক্রি করে দেওয়ার জন্যই বাজেট পেশ করা হয়েছে।’