নয়াদিল্লি: দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০০ জন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। বৃহস্পতিবার এই তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্র।

এদিন ২০১৫ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা সম্পর্কিত একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ি। সেখানে বলা হয়েছে, প্রতি ঘণ্টায় ৫৭টি দুর্ঘটনা ঘটে। তাতে ১৭ জনের মৃত্যু হয়, যার অর্ধেকের বেশি ব্যক্তির বয়স ১৫ থেকে ৩৪ বছরের মধ্যে। গডকড়ি জানান, তিনি এই পরিসংখ্যানে ভীষণই মর্মাহত।

এই রিপোর্টের ফলে, কেন্দ্রের দিকে অনেক প্রশ্নবাণ ধেয়ে আসতে পারে জেনেও গডকড়ি জানান, তাতে তিনি বিচলিত নন। তিনি বলেন, মানুষ আমাদের সমালোচনা করবে। তা সত্ত্বেও আমি এই রিপোর্ট প্রকাশ করলাম। গডকড়ির স্বীকারোক্তি, গত ২ বছর ধরে আমাদের নিরন্তর ও আন্তরিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও পরিস্থিতি খুব একটা উন্নতি হয়নি।

মন্ত্রী বলেন, এত মানুষ যুদ্ধ, মড়ক বা সন্ত্রাসের কবলে পড়েও বলিও হন না। তাঁর মতে, মানুষের প্রাণের বলি হতে দেওয়া যায় না। তিনি জানান, গত ২ বছরে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। যেমন প্রধানমন্ত্রী সড়ক সুরক্ষা যোজনার আওতায় সড়ক সুরক্ষায় প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। তবু দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে।

কিন্তু কেন ঘটছে এত দুর্ঘটনা? জবাব দিয়েছেন গডকড়ি। এর জন্য গডকড়ি পূর্বতন ইউপিএ সরকারকেই দায়ী করেছেন। তাঁর দাবি, সড়ক নির্মাণের খরচকে কম করার জন্য আগের সরকার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার যত্রতত্র ফ্লাইওভার এবং আন্ডারপাস তৈরি করে দিয়েছে। বিপত্তি সেখানেই। সকলে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালায়, আর প্রাণের ঝুঁকি নেয়।

কিন্তু এখন এর নিরাময় কী? গডকড়ির আশা, এই প্রবণতা আটকাতে কেন্দ্রের প্রস্তাবিত মোটর ভেহিকলস আইন পাশ হলে পরিস্থিতি পাল্টাবে। রিপোর্ট বলছে অধিকাংশ দুর্ঘটনার (প্রায় ৭৭ শতাংশ) ক্ষেত্রে চালকরাই দায়ী। গডকড়ির দাবি, এখন দেশে যত চালকের লাইসেন্স রয়েছে, তার মধ্যে অন্তত ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে যথাযথ পরীক্ষা না করেই প্রদান করা হয়। নতুন আইনে সেটা আর হবে না। পুরো বিষয়টি সেন্ট্রালাইজড করা হবে। ফলে, সব রেকর্ড এক পলকেই মিলবে।

পাশাপাশি, বেপরোয়া চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সব গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও হাইওয়েতে ক্যামেরা বসানো হবে। ধরা পড়লেই, মোটা টাকা জরিমানা এবং লাইসেন্স বাতিল করা হবে।