নয়াদিল্লি: সোমবার লোকসভায় পাস হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৯।এই বিলের বিরোধিতায় নয়াদিল্লি, অসম, ত্রিপুরা ও উত্তরপূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যে প্রতিবাদ-আন্দোলনের খবর পাওয়া গিয়েছে। বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে ত্রিপুরায় আগামী ৪৮ ঘন্টা মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিল প্রশাসন।
ত্রিপুরা সরকারের এক চিঠিতে বলা হয়েছে, পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার মঙ্গলবার দুপুর দুটো থেকে এসএমএস ও মোবাইল ডেটার ব্যবহার নিষিদ্ধ করার কথা বলেছে। প্রেস মেসেজের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য হবে।
কংগ্রেস, এনসিপি, তৃণমূল কংগ্রেস সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান বিরোধী দলগুলি লোকসভায় বিলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। দুই ছাত্র সংগঠন নর্থ-ইস্ট স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন (নেসো) এবং অল অসম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আসু)-র বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পুরোভাগে রয়েছে।
মণিপুরেও অল মণিপুর স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আমসু) মঙ্গলবার রাজ্যে ভোর তিনটে থেকে সন্ধে ছয়টা পর্যন্ত বনধের ডাক দেয়। বিল অবিলম্বে প্রত্যাহার না করা হলে আসু-র অন্তর্ভূক্ত এই ইউনিয়ন আন্দোলন আরও জোরদার করার কথা বলেছে।
বিলের বিরুদ্ধে উত্তর-পূর্বের ছাত্র সংগঠনগুলির কেন্দ্রীয় মঞ্চ এনইএসও সমগ্র অঞ্চলে বনধের ডাক দিয়েছে। নাগরিকত্ব সংশোধী বিলে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে যাঁরা পালিয়ে এসেছেন, সেই শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বনধের পরিপ্রেক্ষিতে মণিপুরের বিভিন্ন অংশে মঙ্গলবার দোকানপাট, ব্যবসায়িক ,আর্থিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে বলে সরকারি সূত্রে খবর। প্রতিবাদকারীদের মিছিল বের হয়। সরকারি ও বেসরকারি যানবাহনও পথে নামেনি।
আন্দোলনকারীদের দাবি, এই বিলে ভূমিপুত্রদের অস্তিত্ত্ব বিপন্ন হবে। যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক্ষেত্রে আশঙ্কার কোনও কারণ নেই বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তাঁদের দাবি কেন্দ্র না মেনে নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন অল মণিপুর স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আমসু)-র প্রেসিডেন্ট লাইশ্রাম আথৌবা মেইথেই। একইসঙ্গে সীমান্তবর্তী এই রাজ্যে ইনার লাইন পারমিট সিস্টেম চালুর কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন হয় রাজধানী দিল্লিতেও। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন ও বিদ্বজ্জনদের গোষ্ঠী পথে নেমে বিলের বিরোধিতা করে। যন্তরমন্তরে বিক্ষোভ দেখায় নর্থ-ইস্ট স্টুডেন্টস ইউনিয়ন।
একই জায়গায় বিক্ষোভ দেখায় সিপিএমের দিল্লি রাজ্য কমিটি। এর আগে সিপিএম বিধায়করা সংসদ চত্বরে গাঁধীজীর মূর্তির কাছে প্রতিবাদ জানান। তাঁর সিএবি প্রত্যাহারের দাবি জানান। তাঁরা বলেন, ধর্মের ভিত্তিতে সিএবি চলবে না।