লখনউ: দাদু ও মামার সঙ্গে মীরাট পুলিশের আইজি-র অফিসে এসেছিল পাঁচ বছরের মানবী। মানবীর মা নেই। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের অত্যাচারে আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। মা সীমার মৃত্যুতে দোষীদের শাস্তি চায় মানবী। আইজি রাম কুমারের অফিসে কথা বলার পর মানবীর দাদু শান্তিস্বরূপ শর্মা ও মামা  রোহিত শর্মা একটু বাইরে বেরিয়েছিলেন। সেই সময় মানবী তার ব্যাগ থেকে একটা মাটির ভাঁড় বের করে তা আইজি-র দিকে বাড়িয়ে দেয়। ওই মাটির ভাঁড় আসলে লক্ষ্মীর ঝাঁপি। কয়েকটা কয়েন মানবী জমিয়েছিল ওই ভাঁড়ে। তার ছোট্ট জীবনের পুরো 'সঞ্চয়'টাই আইজি-র দিকে বাড়িয়ে আধো আধো গলায়  সে বলে, ‘এটা নাও। কিন্তু যাদের জন্য আমার মা মারা গিয়েছে তাদের শাস্তি দাও’।
আইজি প্রথমটা চমকে গিয়েছিলেন। সে কেন তার লক্ষ্মীর ঝাঁপি সঙ্গে নিয়ে এসেছে জানতে চাওয়া হলে পাঁচ বছরের শিশু যে উত্তর দিয়েছে, তা দুর্নীতির গালে সপাট থাপ্পড় ছাড়া আর কিছুই নেই। সে জানায়, ‘সবাই তো বলে, পয়সা ছাড়া কোনও কাজ হয় না’। এই বয়সেই মানবীও জেনে গিয়েছে সার সত্যটা- সরকারি অফিসে কাজ করতে গেলে টাকা দিতে হয়।
আইজি রাম কুমার মানবীকে লক্ষ্মীর ঝাঁপিটা নিজের কাছেই রেখে দিতে বলেন। সেইসঙ্গে তার মায়ের মৃত্যুতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে সঞ্জীব কৌশিক নামে এক ব্যক্তির বিয়ে হয়েছিল সীমার। মানবী দম্পতির একমাত্র সন্তান। বিয়ের পরই সঞ্জীব পণের জন্য সীমার ওপর অত্যাচার শুরু করে। এরপর থেকে সীমা বাবার বাড়িতে থাকতেন। তিনি সঞ্জীব ও শ্বশুরবাড়ির অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরও করেছিলেন। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শেষপর্যন্ত চরম পথ বেছে নেন তিনি।
আইজি-র অফিস থেকে বেরোনোর পর মেঝেয় পড়ে মানবীর লক্ষ্মীর ঝাঁপিটা ভেঙে যায়। কেঁদে ফেল সে। মামা নতুন একটা কিনে দেওয়ার কথা বলে ভোলান তাকে। আশ্বাস নিয়ে বাড়ি ফিরেছে মানবী।