নয়াদিল্লি: রাজনৈতিক দলগুলির কোষাগার ভরে উঠছে। কিন্তু কোথা থেকে এই টাকা আসছে তার উৎস বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অজানা। সম্প্রতি একটি রিপোর্টে জানা গিয়েছে, ২০০৪-০৫ থেকে ২০১৪-১৫ পর্যন্ত সময়ে ৭,৮৩৩ কোটি টাকার আয়ের উৎস অজ্ঞাত। মোট আয়ের ৬৯ শতাংশ ভুতুড়ে। এ ধরনের অজ্ঞাত উৎস থেকে টাকা সংগ্রহের ব্যাপারে সবচেয়ে এগিয়ে কংগ্রেস ও বিজেপি।

ওই সময় পর্বে জাতীয় ও আঞ্চলিক দলগুলির তহবিলে মোট ১১,৩৬৭ কোটি টাকা চাঁদা জমা পড়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৬৯ শতাংশ অর্থাৎ ৭,৮৩৩ কোটি টাকার ক্ষেত্রেই চাঁদার উৎস কী, তা কেউ জানে না। দিল্লির থিঙ্ক ট্যাঙ্ক অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর)-এর রিপোর্টে এ কথা বলা হয়েছে। ওই সময় পর্বে সুনির্দিষ্ট উৎস থেকে রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের পরিমাণ ১,৮৩৫.৩৪ কোটি টাকা (মোট আয়ের ১৬ শতাংশ)।এছাড়াও সম্পত্তি বিক্রয়, সদস্য চাঁদা, ব্যাঙ্কের সুদ, পত্রপত্রিকা বিক্রি এবং লেভি থেকে আয়ের পরিমাণ ১,৬৯৮.৭৩ কোটি টাকা। যা মোট আয়ের ১৫ শতাংশ।

এডিআর-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই ১১ বছরে আগের জাতীয় দলগুলির মধ্যে সব থেকে বেশি অজ্ঞাত সূত্র থেকে চাঁদা ঢুকেছে কংগ্রেসের তহবিলে। প্রায় ৮৩ শতাংশ। এর পরিমাণ ৩,৩২৩.৩৯ কোটি টাকা।
তার পরেই রয়েছে বিজেপি। কেন্দ্রের বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের ৬৫ শতাংশ চাঁদা (২,১২৫.৯১ কোটি টাকা)  কোথা থেকে এসেছে,  তারও কোনও হিসেবনিকেশ নেই। আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে এ ব্যাপারে সব থেকে এগিয়ে উত্তরপ্রদেশের সমাজবাদী পার্টি এবং পঞ্জাবের শিরোমণি অকালি দল। দুই রাজ্যের বর্তমান শাসক দলের যথাক্রমে ৯৪ শতাংশ ও ৮৬ শতাংশ আয়ের উৎস অজ্ঞাত।

২০০৪-০৫-এর ২৭৪.১৩ কোটি টাকা থেকে ২০১৪-১৫ পর্যন্ত সময়ে জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলির অজ্ঞাত সূত্র থেকে আয়ের পরিমাণ ৩১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১,১৩০.৯২ কোটি টাকা।

ওই সময় পর্বে আঞ্চলিক দলগুলির অজ্ঞাত সূত্র থেকে আয় ৩৭.৩৯৩ কোটি টাকা থেকে ৬৫২ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২৮১.০১ কোটি টাকা।

চলতি আইন অনুযায়ী, ২০ হাজার টাকা বা তার কম

নগদ চাঁদার ক্ষেত্রে দাতার নামধাম জানাতে হয় না। এই অর্থের উৎস নিয়ে কারও খোঁজখবর করার ক্ষমতা নেই। রাজনৈতিক দলগুলির দাবি, তাঁদের এই অজানা উৎস থেকে আয় আসলে ২০ হাজার টাকার কম চাঁদা থেকেই এসেছে। এ ব্যাপারে সব থেকে এগিয়ে মায়াবতীর দল বিএসপি। মায়াবতীর দাবি, তাঁর দলের আয়ের সবটাই এসেছে মাথা পিছু ২০ হাজার টাকার কম চাঁদা থেকে। অথচ সেই চাঁদা দিয়েই মায়াবতীর দলের আয় ১১ বছরে ২০৫৭ শতাংশ বেড়েছে। ৫.১৯ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১১১.৯৬ কোটি টাকা।